এক নতুন বৈষম্যহীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের জন্য টালমাটাল ছিল সারা দেশ। পুরোনো চিন্তাচেতনা, ধ্যানধারণা আর বৈষম্যকে পিছনে ফেলে ন্যায় ও ইনসাফকে ধারণ করে সামনের এগিয়ে যাওয়ার যে স্বপ্ন দেখিয়েছে তরুণ ছাত্ররা, তার গল্প দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আজ পৌঁছে গেছে বহির্বিশ্বে। তরুণ সমাজের মননে সেই স্বপ্নের বীজ বোনার অন্যতম কারিগর ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম ঢাকারই সন্তান। ঢাকার অদূরে ফকিরখালীতে ১৯৯৮ সালে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা বদরুল ইসলাম জামির পেশায় একজন স্কুলশিক্ষক ও মা মমতাজ নাহার গৃহিণী। ব্যক্তিগত জীবনে নাহিদ বিবাহিত। ২০১৪ সালে ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রী মডেল হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকার তেঁজগাওয়ের সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে। ২০২২ সালে অনার্স শেষ করেন তিনি। বর্তমানে তিনি সমাজবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত।
২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনেও সক্রিয়। অংশগ্রহণ করেছিলেন নাহিদ। তবে সেবার তিনি নেতৃত্বে ছিলেন না। আন্দোলনে অংশ নেবার কারণে তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের বাধার মুখে পড়তে হয় নাহিদকে। তবে দমে না গিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নাহিদ।
নাহিদ ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে নুরুল-রাশেদ-ফারুক প্যানেল থেকে অংশগ্রহণ করেন। নাহিদ সেবার সংস্কৃতি সম্পাদক পদে নির্বাচন করে। নির্বাচনে তিনি জয় লাভে ব্যর্থ হয়।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের অধীনে কাজ করে যেতে থাকেন নাহিদ। কিন্তু একপর্যায়ে শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। এ সময় আরও অনেক নেতাকর্মী উক্ত সংগঠন থেকে বেরিয়ে আসে।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে বেরিয়ে যাওয়া নেতাকর্মীদের একাংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নির্দলীয় ছাত্র সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’ নামে আত্নপ্রকাশ করে ।এর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পান করেন নাহিদ ইসলাম।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্য আরও ১৩ উপদেষ্টা শপথ নিয়েছেন। উপদেষ্টাদের মধ্যে জায়গা পাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন।
শুভ/রুশু//