রাবি প্রতিনিধি: দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত ৩ নেতাকে দলের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বহিষ্কারের পর দলীয় ব্যানারে কোন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকলেও শাস্তিপ্রাপ্তদের এমন সক্রিয় অংশগ্রহণে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে সংগঠনটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মাঝে।
প্রশ্ন উঠছে দলীয় অব্যাহতি-বহিষ্কারাদেশ কি শুধুই লোক দেখানো ছিল!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রদল নেতাকর্মী জানান, রাবি ছাত্রদলে এমন স্পষ্ট চাঁদাবাজির অভিযোগে বহিষ্কার হওয়া নেতা থাকা আমাদের জন্য হতাশাজনক। এভাবে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে এবং একইসাথে নতুনদের জন্য রাজনীতির পথ সংকীর্ণ করে দিচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করবো কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন।
সংশ্লিষ্ট নেতারা হলেন- শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির বহিষ্কৃত সদস্য ফারুক হোসেন এবং অব্যাহতিপ্রাপ্ত যুগ্ম-আহ্বায়ক আহসান হাবিব এবং সদস্য হাসিবুর ইসলাম হাসিব।
এর আগে, নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ সদস্যের কাছে চাঁদাবাজির ফোনালাপ ফাস হওয়ার পর শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আহসান হাবিব এবং সদস্য হাসিবুর ইসলাম হাসিবকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। পরে ২২ অক্টোবর আরেক ফোনালাপ ফাসের পর একই অভিযোগে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফারুক হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়।
জানা গেছে, রাবি ভর্তি পরীক্ষায় এ এবং বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় ছাত্রদলের বসানো টেন্টে তারা উপস্থিত ছিলেন। সম্প্রতি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশেও অংশ নিতেও দেখা গেছে এই নেতাদের। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিজেদের ফেসবুক একাউন্টে ছাত্রদলের নানা প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের বিষয়টিও প্রচার করছেন তারা।
বহিষ্কৃত ফারুক হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়কের সাথে যোগাযোগ করতে বলতে বলেন তিনি।
এদিকে আহসান হাবিব বলেন, আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমার দলীয় সদস্যের পদ রয়েছে। তাই দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কোন বাধা নেই আমার।
আরেক নেতা হাসিবুর রহমানকে মুঠোফোন একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, বহিষ্কৃতদের দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণে নিষেধ করা হয়েছে। এরপরেও তারা নানা সময়ে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। অব্যাহতি পাওয়া নেতার বিষয়ে তিনি বলেন, দলীয় প্রোগ্রামগুলোতে বক্তব্য প্রদানের মতো বিষয়গুলোর সুযোগ নেই তার। আমরা দ্রুতই এই বিষয়টি দেখবো।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বহিষ্কৃত হওয়ার পর কোন নেতা দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। এই বিষয়টি এখনও আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে আমরা দ্রুতই একটি অফিসিয়াল নোট পাঠাবো এবং সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।