বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) উপাচার্যের পদত্যাগ চাচ্ছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের একাংশ। শিক্ষকদের একাংশ তাঁদের সম্মিলিত বিবৃতি প্রকাশ করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহ আলিমুজ্জামান তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জবাব দেন।
সাংবাদিক: আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে আপনি ব্যক্তিগত অতিথিদের সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ দিয়ে আপ্যায়ন করেছেন। এই বিষয়টি কি সত্য?
উপাচার্য: এটি একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমি কখনো সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ দিয়ে ব্যক্তিগত অতিথি আপ্যায়ন করিনি। এ ধরণের অভিযোগের কোন প্রমান কেউ দেখাতে পারবে না।
সাংবাদিক: যেসব কর্মকর্তা উপাচার্যের কথায় এক মত হতেন না তাদের উপর নিপিড়ন চালানো হতো। কথাটি কতটুকু সত্য?
উপাচার্য: কর্মকর্তারা তাদের কাজ যথাযথভাবে না করলে বকাবকি করা হতো কিন্তু কখনো কাউকে নির্যাতন করা হয়নি। অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী সঠিক সময়ে অফিসে আসেন না এবং অনুমতি ছাড়া চলে যান। এসব ক্ষেত্রে তাদের কিছু বলা হলে সেটা যদি নিপীড়ন হয় তাহলে কিছু বলার থাকে না। কারণ সরকার তাদের বেতন দিচ্ছে কাজ করার জন্য। কাজ না করে, দায়িত্ব পালন না করে সমস্যা সৃষ্টি করলে এখন থেকে ভাবছি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব। যারা সবচেয়ে ফাঁকিবাজ তারা নিজের অপরাধ ঢাকার জন্য এসব মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ছড়ান।
সাংবাদিক: অভিযোগ আছে, উপাচার্য হওয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা দিয়েছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে। কথাটি কতটুকু সত্য?
উপাচার্য: এটি মিথ্যা অভিযোগ। আমি উপাচার্য হতে কাউকে কোনো টাকা দেইনি। আমার বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়, আমি সাথে সাথে উপাচার্যের পদ থেকে পদত্যাগ করব এবং যারা অভিযোগ করেছেন আমি তাদের বলবো আমার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দায়ের করেন।
সাংবাদিক: উপাচার্য ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সাধারণ ছাত্রদের ডেকে প্রশাসনের মাধ্যমে নির্যাতন করেছেন, ছাত্র আন্দোলন থামাতে বিশ্ববিদ্যালয় কোষাগার থেকে ছাত্রলীগকে অর্থপ্রদান করেছেন, ছাত্রদের পাশে থেকে মানববন্ধন করার জন্য শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিয়েছেন। এ বিষয় নিয়ে কিছু বলুন।
উপাচার্য: সবগুলো অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি কখনোই ছাত্রদের বিরুদ্ধে কোনো মানববন্ধন উদ্যোগও নেইনি। ছাত্র বা শিক্ষকদের হুমকি দেইনি এবং প্রশাসনের কারো মাধ্যমেও এ কাজ করাইনি। ছাত্রলীগের টাকার যে বিষয়টি ছিলো, ছাত্রলীগ প্রতি বছর আগস্টে মাসব্যাপী যে শোক কার্যক্রমের যে প্রথা ছিলো তার জন্য মাসের শুরুতে কিছু টাকা প্রতিবছর নিতো। এ বছরও তারা সেই টাকা নিয়েছিলো। কিন্তু ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই টাকা ফেরত আনা হয়।
সাংবাদিক: আগস্টের ৩ তারিখের আপনার একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এটা নিয়ে আপনার বক্তব্য কি?
উপাচার্য: কেউ কেউ বলেন আমি আগস্টের ৩ তারিখ মিটিং করেছি। প্রকৃতপক্ষে আগস্টের ৩ তারিখে আমি কোনো মিটিং ডাকিনি এবং আমি কাউকে আমার অফিসে আসতেও বলিনি। প্রকৃতপক্ষে সেদিন আইটিইটির সভাপতিসহ দুই তিনজন সিনিয়র অ্যালামনাই আমার অফিসে এসেছিলো। তারা আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন পরের দিন বুটেক্সের সামনে সরকারের পক্ষে মানববন্ধন করতে এবং তারা অনুরোধ করেছিলেন আমি যেন শিক্ষকদের মানববন্ধনে অংশগ্রহনের জন্য বলি। আমি তাদের বলেছিলাম আমি কোনো শিক্ষককে এই বিষয়ে অনুরোধ করতে পারবো না। আমি তাদের ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে কোন কথা বলি নি। ওইসময় মূলত যারা এসেছিলেন তারাই এই কথাগুলো বলেছিলেন।
সাংবাদিক: উপাচার্য হিসেবে টিকে থাকার জন্য নিজেকে বিএনপি অথবা জামাতের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা বলছেন। উক্তিটি কি সত্য?
উপাচার্য: আমি এ ধরনের কথা কখনোই বলিনি। তবে বিগত শিক্ষামন্ত্রী আমাকে জামায়াতই বলে অভিহিত করতো। প্রকৃত সত্য হচ্ছে আমি ছাত্র জীবন থেকে তাবলীগ করে আসছি এবং এখনো সেই আদর্শে রয়েছি।
সাংবাদিক: পূর্ববর্তী সরকারের আমলে ইয়োর্মা শাহের জাহান নামক ছাত্রী আপনার বিরুদ্ধে নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ করে। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি?
উপাচার্য: কেউ এ বিষয় কোনো প্রমাণ নিয়ে আসলে আমি অবশ্যই তার দায়ভার নেব। কিন্তু বিষয়টি পুরোপুরি মিথ্যা। আমি কোনদিন কোনো ছাত্র বা ছাত্রী কারো ওপর নির্যাতন করিনি। ইয়োর্মার বিষয়টি কোর্টে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে। পূর্ববর্তী উপাচার্যের আমলে বিষয়টি কোর্টে যায় এবং সেই ধারাবাহিকতা বর্তমান ভিসি হিসেবে বিষয়টি আমার কাছে এসেছে। যেহেতু বিষয়টি কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে তাই এ বিষয়ে আমার বেশিকিছু বলা ঠিক হবে না। কিন্তু সে আমার সম্পর্কে যে কথাগুলো বলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, অত্যন্ত অবমাননাকর এবং অসম্মানজনক। পরীক্ষা এবং ফলাফল সংক্রান্ত বিষয়ে ভিসির কোনো ধরণের হস্তক্ষেপ নেই। এসব বিষয় মূলত ডিন, হেড ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও বিভাগই দেখে। তবে আমি আন্তরিকভাবে চাই সে যেন তার ফেল করা বিষয়গুলো পাশ করে খুব দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন করতে পারে।
সাংবাদিক: যারা আগে ছাত্রলীগের হয়ে বিভিন্ন মিটিং মিছিল করেছে তারাই বর্তমানে উপাচার্যের পদত্যাগ ঠেকাতে মাঠে নেমেছে। কথাটি কতটুকু সত্য?
উপাচার্য: কথাটি পুরোপুরি হাস্যকর। যারা আগে ছাত্রলীগ করতো তারা কেউ এখন ক্যাম্পাসে নেই। আপনারা সাংবাদিকরা নিজেরা যাচাই-বাছাই করুন কথাটি সত্য কিনা মিথ্যা। কারণ আগে যারা ছাত্রলীগের হয়ে মিটিং মিছিল করেছে এবং যারা ভিসির অপসারণ ঠেকাতে বর্তমানে মাঠে নেমেছে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট পুরোপুরি ভিন্ন। তাই এই অভিযোগটি ভিত্তিহীন। কারণ আমি কোনো ছাত্রকে বলিনি আমার পক্ষে মিছিল করো অথবা আমার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মাঠে নামো।
সাংবাদিক: ছাত্র জনতার গণ আন্দোলনে এক দফা নস্যাৎ করতে আপনার কোন পদক্ষেপ ছিল কিনা? আপনি কি আন্দোলন নস্যাৎ করতে কোষাগার থেকে কোন অর্থ প্রদান করেছেন?
উপাচার্য: এ বিষয়ে আমার কোন হস্তক্ষেপ ছিল না। কিন্তু এক দফাকে নস্যাৎ করতে ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে যারা তখন মিটিং ডেকেছিলো তারাই বর্তমানে খোলস পাল্টে সম্পুর্ণ বিপরীত অবস্থান নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রয়োজনে আপনারা অনান্য শিক্ষকদের কাছ থেকে জনতে পারেন কে বা কারা ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলো। আমি ছাত্র আআন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য কাউকে কোন অর্থ প্রদান করিনি।
সাংবাদিক: উপাচার্যের বাড়িতে নিয়োগকৃত বুয়ার বেতনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অতিরিক্ত টাকা উত্তলোন করা হয়েছে। কথাটা কি সত্য?
উপাচার্য: এ কথাটি সম্পুর্ণ মিথ্যা। এ বিষয়ে কারো কোন সন্দেহ থাকলে তিনি অ্যাকাউন্ট সেকশনে গিয়ে খোঁজ নিতে পারেন। তাহলে আশা করি এ বিষয়ে তার আর কোন সন্দেহ থাকবে না।
সাংবাদিক: বেশ কয়টি গণমাধ্যমে আপনার বিরুদ্ধে একটি অডিও ক্লিপের প্রমাণের কথা বলা হয়েছে। যেখানে পূর্ববর্তী সরকারের পাশে থাকার কথা বলা হয়। এ বিষয় নিয়ে কিছু বলুন।
উপাচার্য: অডিও ক্লিপটি কে বা কারা করেছে সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। আমার ধারণা যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পিআরও জনাব শফিক সাহেব কাজটি করে থাকতে পারেন। কারণ পূর্বে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করিয়েছেন।
সাংবাদিক: উপাচার্য তার পছন্দের ব্যক্তিকে বাসা বরাদ্দ দিতে বাসা বরাদ্দ কমিটির সভাপতি সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। কথাটি কতটুকু সত্য?
উপাচার্য: কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাসা বরাদ্দের জন্য বুটেক্সের একটি নীতিমালা রয়েছে। এই নীতিমালা মেনেই তাদেরকে বাসা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণের জন্য কিছু কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ বাসা ভেঙে ফেলা হয়। তখন সেসব কর্মচারীদের বাসা দেওয়ার কথা ওঠে। তাদের আর্থিক অসচ্ছলতার কথা ভেবে মানবিক দিক বিবেচনা করে একটি বাসায় দুটি পরিবার দেওয়ার প্রস্তাবনা করা হয়। এবং সেটিও বরাদ্দ কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যেখানে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতির সভাপতিগণ উপস্থিত ছিলেন। এবং বরাদ্দ কমিটির সভাপতি সাথে যে সমস্যার কথা বলা হচ্ছে সেটি হল বুটেক্সের বরাদ্দকৃত বাসাগুলোতে আগে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভাড়া দিত। ফলে সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে ভাড়াটিয়ারা। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কে বিভিন্ন পুলিশি ঝামেলায় পড়তে হয়। পরবর্তীতে আমি উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর নোটিশ এর মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাড়াটিয়া না রাখার জন্য নির্দেশ দেই। পরবর্তীতে যারা এ নির্দেশ অমান্য করে তাদেরকে বাসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু এ নির্দেশনা অমান্য করে বাসা বরাদ্দ কমিটির সভাপতি তার নিজের বিভাগের একজনকে বাসা বরাদ্দ দিতে চায়। যার ফলে তাদের সাথে মতবিরোধ হয়।
সাংবাদিক: পরিচালক গবেষণা সম্প্রসারণ নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ভঙ্গ করেছেন উপাচার্য। যেখানে অধ্যাপক নিয়োগ দেওয়ার কথা সেখানে সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক নিয়োগ দিয়েছেন। কথাটি কতটুকু সত্য?
উপাচার্য: একটি হলো পরিচালক (গবেষণা সম্প্রসারণ) পদে দীর্ঘদিন একজন অধ্যাপক দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে যখন পরিবর্তনের কথা আসে তখন আমি ভেবেছি যে কাকে দিয়ে ভালো কাজ হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জর্নাল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। এই কাজের জন্য আমি ড. ফায়েজকে উপযুক্ত বিবেচনা করে সাময়িক সময়ের জন্য ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আমার ভাবনা ছিলো জার্নাল পাবলিশ হওয়ার পর একজন অধ্যাপককে নিয়োগ দেয়ার। বলা বাহুল্য যে ড. ফায়েজ ইতোমধ্যে বুটেক্স জর্নালের আন্তর্জাতিক রেজিষ্ট্রেশনসহ অনেক কাজ এগিয়ে নিয়ে গেছেন। কিন্তু দুঃখজনক ভাবে কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক এটি নিয়ে সমালোচনামুখোর হয়। তার নিয়োগ বাতিল করে ইতোমধ্যে অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগমকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এবার আসি পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) এর কথায়। এ পদে অধ্যাপক জুলহাস উদ্দিনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। তিনি ২ বছর এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। কিন্তু তিনি এই দুই বছরে সামান্য তম কোন কাজ করেন নি। উপরন্তু তিনি উক্ত পদের দায়িত্বভাতা গ্রহণ করেছেন। আমি দায়িত্বে আসার পর ড. আব্বাস উদ্দিনকে এ পদের জন্য সবচেয়ে যোগ্য এবং উপযুক্ত মনে করেছি। কারন তার দেশে বিদেশে বিভিন্ন কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আমি তাকে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে নিয়োগ দিয়েছি। যেহেতু আমি দুইজন শিক্ষককেই সাময়িক সময়ের জন্য ভারপ্রাপ্ত হিসাবে নিয়োগ দিয়েছি তাই এখানে আইনের কোন ব্যত্যয় হয়নি।
সাংবাদিক: বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আপনি গ্রেড ওয়ান অধ্যাপকদের নাম দেননি, নিজ দলীয় শিক্ষকদের নাম দিয়েছেন। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি?
উপাচার্য: বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার কোন দল নেই। তাই দলের নাম আসার কোন প্রশ্নই আসে না। সবাই আমার সহকর্মী। আমার কাছে একজন শিক্ষকের মূল্যায়ন তার কাজের মধ্যমে, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের জন্য কতটুকু দায়িত্বশীল। এবার আসি ট্রেজারার পদে নিয়োগের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষকদের নাম প্রেরণ প্রসঙ্গে। আমার পূর্ববর্তী উপাচার্য অধ্যাপক মো: আবুল কাশেম অধ্যাপক ড. ফরহাদ হোসেনের নাম এক নম্বরে রেখে দুই ও তিন নম্বরে তার থেকে সিনিয়র শিক্ষকের নাম মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। আমি উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পূর্বের ধারাবাহিকতায় অধ্যাপক ড. ফরহাদ হোসেনকেই এক নম্বরে রেখে দুই ও তিন নম্বরে দুইজন জুনিওর শিক্ষকদের নাম মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করি। আমি মনে করি যিনি এ কাজের জন্য উপযুক্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে আমি তার নামই প্রেরণ করেছি। পরবর্তীতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়জন সিনিয়র শিক্ষক মন্ত্রণালয়ের গিয়ে ঝামেলা করেন। ফলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জনকে প্রথমে ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজনকে দ্বিতীয় অবস্থানে রেখে একটি ফাইল প্রস্তুত করা হয়। যা পরে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে যায় পাশের জন্য। কিন্তু দেশের সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সেটা আর কার্যকর হয়নি।
সাংবাদিক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জসীমউদ্দীন হল ছাত্রলীগ নেতা নাসিরকে বুটেক্সের শহীদ আজিজ হলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগের অভিযোগ আসে। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি?
উপাচার্য: বুটেক্সের নিয়োগের নীতিমালা মেনেই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তাকে নিয়োগ পরীক্ষা পাস করার পরই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কাউকে নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে আমার একার সিদ্ধান্ত শেষ সিদ্ধান্ত নয়। ভাইভা বোর্ডে আরো দুই থেকে তিনজন থাকেন। সবার সম্মতিক্রমে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়।