অলিম্পিক গেমস-২০২৪ আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ফ্রান্সের রেল নেটওয়ার্কে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাতে রাজধানী প্যারিসের সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন রুটের রেল লাইন ও রেল গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায় দুষ্কৃতিকারীরা। ফ্রান্সের রাষ্ট্রায়ত্ত রেল নেটওয়ার্ক কর্তৃপক্ষ সংস্থা এএসএনসিএফের কর্মকর্তাদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তবে এখন অবধি এ হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনে গোষ্ঠী।
এ বিষয়ে এসএনসিফের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দুষ্কৃতকারীরা বিভিন্ন স্থানে রেল লাইন উপড়ে ফেলেছে। অনেক স্থানে ট্রেনের কোচ ও স্টেশনে অগ্নিসংযোগও করা হয়েছে। এক কথায়, ফ্রান্সের পুরো রেল নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে ফেলেছে হামলাকারীরা।”
পরে শুক্রবার (২৬ জুলাই) স্থানীয় সময় সকালে এএসএনসিফের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে জানানো হয়, ফ্রান্সের রেল নেটওয়ার্ক সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। গতরাতে দেশের আটলান্টিক, উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের লাইনের অনেকগুলো রেলগাড়ি ও স্টেশনে দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করে। পাশাপাশি, তারা বেশ কয়েকটি স্থানে উপড়ে ফেলেছে রেললাইনও। ইতিমধ্যেই আমরা মেরামতের কাজ শুরু করেছি। এতে বেশ কিছু সময় দরকার হওয়ায় যাত্রীসাধারণকে ধৈর্য্য ধারণের জন্য অনুরোধ করেছে সংস্থাটি।
এ ঘটনায় ফরাসি ক্রীড়ামন্ত্রী অ্যামেলি ওউদেয়া-ক্যাস্তেরা দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএম টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রেল নেটওয়ার্কে হামলার এই ঘটনাকে ‘ধ্বংসাত্মক’ উল্লেখ করে বলেছেন, আমরা এ ঘটনায় হতবাক হয়ে গেছি। এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
এ দিকে, হামলার ধরন ও আলামত দেখে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা ধারণা করছেন— এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত সহিংসতা। অলিম্পিক আসরের সুষ্ঠু আয়োজনকে বাধাগ্রস্ত করতে জনমনে ভীতির সঞ্চার সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এ ধরনের হামলা চালানো হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
উল্লেখ্য, বৈশ্বিক ক্রীড়া আসর অলিম্পিক গেমেসের আয়োজন ঘিরে রাজধানী ফ্রান্সে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বেষ্টনী গড়ে তুলেছে ফ্রান্স। সরকারের নির্দেশনা অনুসারে, ৪৫ হাজারেরও বেশি পুলিশ, ১০ হাজারেরও বেশি সেনাসদস্য এবং বিভিন্ন বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার অন্তত ২ হাজার নিরাপত্তাকর্মী অলিম্পিক আসরের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।