নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর পর জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস চাপের মুখে পড়েছেন। তার জোট সরকারের শরিক দলগুলোও ভোটারদের ক্ষোভের সম্মুখীন হচ্ছে, এবং দেশে উগ্র দক্ষিণপন্থি ও পপুলিস্ট শক্তির উত্থান ঘটছে। প্রধান বিরোধী রক্ষণশীল শিবির সরকারের কঠোর সমালোচনা করে চলেছে, এবং সাধারণ নির্বাচনের এক বছর আগে তারা ফ্রিডরিশ ম্যারৎসকে চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী করে আক্রমণ আরও তীব্র করেছে।
পূর্ব স্যাক্সনি ও টুরিঙ্গিয়া রাজ্যে ভরাডুবির পর শলৎসের এসপিডি দল আগামী রোববার বার্লিন-সংলগ্ন ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে ভোটারদের সমর্থন চাইবে। ১৯৯০ সালের পর থেকে এই রাজ্যে এসপিডি নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আসছে।
জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, এবার সেই ধারাবাহিকতা ভাঙতে পারে। উগ্র দক্ষিণপন্থি এএফডি দলের সমর্থন এসপিডির কাছাকাছি বা সামান্য এগিয়ে রয়েছে। যদি ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্য এসপিডির হাতছাড়া হয়, তাহলে চ্যান্সেলর হিসেবে শলৎসের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। এমনকি নিজের দলের মধ্যেও তার প্রতি সমর্থন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, ফলে ২০২৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে অন্য কোনো নেতাকে চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী করা হতে পারে। যদি তা ঘটে, শলৎসের বর্তমান কার্যকাল পূর্ণ করাও কঠিন হতে পারে।
এসপিডির একটি অংশ মনে করছে, বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শলৎসের উচিত নতুন করে চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দেওয়া। এতে সংকটে থাকা জোট সরকার নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে কি না, সে বিষয়েও আলোচনা চলছে।
তবে বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও জনপ্রিয় নেতা বরিস পিস্টোরিউস সরকার পরিচালনা করলে এসপিডির অবস্থার কিছু উন্নতি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। শলৎসের নেতৃত্বে তিন দলের জোট সরকারের জনপ্রিয়তা কমে গেছে, মূলত বেড়ে চলা মূল্যস্ফীতি, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, এবং বিদেশি আশ্রয়প্রার্থীদের আগমনের কারণে ভোটারদের মনে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এছাড়া, জোট সরকারের মধ্যে প্রকাশ্যে কোন্দল ও শলৎসের নেতৃত্বের অভাবও অভিযোগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্য নির্বাচনে যদি এসপিডি সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে সরকার গঠনের দায়িত্ব পায়, তাহলে শলৎস আবার ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পেতে পারেন।
এই রাজ্যের রাজধানী পট্সডাম তার নির্বাচনি এলাকা, এবং তার স্ত্রীও সেখানে মন্ত্রী। তবে নির্বাচনী প্রচারে এসপিডি শলৎসের নাম উল্লেখ না করে জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী ডিটমার ভইডকে সামনে রেখে ভোটারদের সমর্থন চাইছে। যদি এএফডি সবচেয়ে শক্তিশালী দল হয়, তাহলে শলৎস জানিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করে কোনো জোট সরকারের নেতৃত্ব দেবেন না।