কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ সহ বেশ কয়েকটি পদ শূন্য রয়েছে প্রায় একমাস যাবত। উপাচার্য পদে নিয়োগ পেতে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম শরীফুল করিম এর নাম। তবে তার বিরুদ্ধে ২০১০ সালে এক শিক্ষককে মারধর এবং ২০১৬ সালে এক শিক্ষকের সাথে উদ্ধত আচরণের অভিযোগ রয়েছে।
তবে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শরীফুল করিমের দাবি তিনি আগেও আওয়ামী সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। এসব ভিত্তিহীন পুরাতন অভিযোগ গুলো সামনে নিয়ে এসে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকরা আবারো ষড়যন্ত্র করছে তার বিরুদ্ধে।
অধ্যাপক ড. শরীফুল করিমের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে সালে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহফুজুর রহমানকে তৎকালীন উপাচার্য জেহাদুল করিমের কক্ষে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা ও মারধর এবং ২০১৬ সালে ইংরেজি বিভাগের পূর্বনির্ধারিত সান্ধ্যকালীন কোর্সের (ইভিনিং ইন মার্স্টাস-ইএমএ) প্রশ্ন মডারেশনকে কেন্দ্র করে নিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল হায়াৎকে গাল-মন্দ ও মারতে উদ্ধত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শরীফুল করিম বলেন, ‘তৎকালীন উপাচার্য জিহাদুল করিম স্যারের নিয়োগটা ছিলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়। উনি এখানে উপাচার্য হয়ে আসার সাত আট মাস পরে জাতীয় নির্বাচন হয়েছে তাতে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছে। আমি তখন একজন সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে একটা হলের দায়িত্ত্বে ছিলাম। যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তৎকালীন শিক্ষা উপদেষ্টা আলাওদ্দীন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পরিবর্তন করার জন্য দাবি করেন। এখানে শিক্ষকরা তখন কাজী জাহিদের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠন করেন। কিন্তু আমি সহ চার পাচজন বঙ্গবন্ধু পরিষদে যোগদান করিনি। এই বঙ্গবন্ধু পরিষদে আমাদের যোগদান না করা নিয়ে আমাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়।পরবর্তীতে বিভিন্ন ইস্যুতে তারা জিহাদুল করিম স্যার এবং লোকপ্রশাসনের বিভাগের শিক্ষক আফরোজা ম্যাডামকে তালাবদ্ধ করে। তখন ম্যাডামকে আর স্যারকে তালামুক্ত করার জন্য উপস্থিত হই। তখন তাদের সাথে আমাদের তর্কাতর্কি হয় এসময় পুলিশ আসে, পুলিশ এসে অনেককে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় ঠিক এমন একটা সময়ে হয়তো উনার সাথে আমাদের একটা তর্কাতর্কি হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘তার পরবর্তীতে একমাস পরে জিহাদুল করিম স্যার পদত্যাগ করেন এরমধ্যে আমাদের নামে কেউ অভিযোগ করেনি। যখন নতুন উপাচার্য আসে উনি ছিলেন আওয়ামী লীগের লোক। উনি আসার একমাস পরে আমাদের নামে অভিযোগ করেন আমার আর আমজাদের বিপক্ষে যে আমরা মাহফুজুর রহমানকে মেরেছি। তখন তারা আমাদের ফোর্স লিভ দেয়। এসব করেছে তারা আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে। তখন তারা আমাদের বিএনপি রাজাকারে লোক বলে ট্যাগ দিয়েছে। আমরা আবার মামলা করি সেই মামলায় জিতে আমরা আবার ক্যাম্পাসে ফিরে এসেছি। যেহেতু আমরা মামলায় জিতেছি সেহেতু বিষয়টা কতটা সত্য তা বুঝা যায়।
ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল হায়াতের সাথে ঘটা ঘটনার ব্যাপারে বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ আমাদের মধ্যে একটা ভুল বুঝাবুঝি।’
ভুক্তভোগী ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল হায়াত বলেন, ‘স্যার আর আমার মধ্যে একটা বিষয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিলো। আমি প্রশাসন বরাবর একটা অভিযোগ করেছিলাম পরে অভিযোগটি স্বেচ্ছায় প্রত্যাহার করে নেই। স্যার যখন চেয়ারম্যান ছিলো তখন বিভাগ খুব সুন্দরভাবে চলছিলো। স্যার স্টুডেন্ট ফ্রেন্ডলি মানুষ এবং প্রশাসনিক।’
রকি/আরএস