আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ। বোর্ডের ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর) থেকে বিভিন্ন ধাপে মোট ২৫০ কোটি টাকা ১৪টি ব্যাংকে স্থানান্তর করা হয়েছে, যাকে বলা হচ্ছে আয় বাড়ানোর কৌশল। তবে এই ঘটনা ঘিরে ক্রিকেট অঙ্গনে শুরু হয়েছে ব্যাপক গুঞ্জন ও বিতর্ক। বিষয়টিকে ঘিরে ফারুক আহমেদকে নিয়ে অনেকে করেছেন নানা রকম সমালোচনাও ।
প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছিল, বোর্ড সভাপতির একক সিদ্ধান্তে প্রায় ১২০ কোটি টাকা সরানো হয়েছে।
কিন্তু দেশের জাতীয় একটি গণমাধ্যমের প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আসল অঙ্কটি আরো বড়—মোট ২৫০ কোটি টাকা। পাশাপাশি, পুরো প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন ফাইনান্স কমিটির প্রধানসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী বিসিবি পরিচালক।
তবে এসব গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছে বিসিবি। আজ শনিবার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিসিবি বলেছে, ‘জাতীয় গণমাধ্যমের একটি অংশে বোর্ডের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নজরে এসেছে।
বিসিবির মতে এসব প্রতিবেদন ভুল তথ্যভিত্তিক এবং বোর্ড ও এর সভাপতি জনাব ফারুক আহমেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে।’
তাদের দেওয়া বিবৃতিতে এফডিআরের টাকা স্থানান্তরের ব্যাখ্যাও দিয়েছে বোর্ড। বিসিবি বলেছে, ‘গত ২০২৪ সালের আগস্টে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর জনাব ফারুক আহমেদ বিগত বছরগুলোর আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের গণআন্দোলনের পর দেশের অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে বোর্ডের আর্থিক স্বার্থ সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেন।’
‘এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিসিবি তার ব্যাংকিং সম্পর্কগুলোর পুনর্মূল্যায়ন করে এবং কৌশলগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় যে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ‘গ্রীন’ ও ‘ইয়েলো’ জোনভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথেই বোর্ড আর্থিক লেনদেনে জড়িত থাকবে।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিসিবি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলো থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে এবং এর মধ্যে ২৩৮ কোটি টাকা গ্রীন ও ইয়েলো জোনভুক্ত ব্যাংকগুলোতে পুনঃবিনিয়োগ করে। অবশিষ্ট ১২ কোটি টাকা বিসিবির বিবিধ পরিচালনা ব্যয় নির্বাহের জন্য নির্ধারিত একাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।’
‘প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বোর্ড সভাপতি কোন একক সিদ্ধান্তবলে বোর্ড এর পরিচালনা পর্ষদের অজ্ঞাতে ব্যাঙ্ক পরিবর্তনের অথবা লেনদেন সংক্রান্ত নির্দেশ প্রদান করেন না। পার্টনার ব্যাংকগুলোর সাথে বিসিবির আর্থিক বিষয়ক লেনদেনে স্বাক্ষরপ্রদানকারী হিসাবে দুজন বোর্ড পরিচালক আছেন বোর্ডের ফিনান্স কমিটি চেয়ারম্যান জনাব ফাহিম সিনহা ও টেন্ডার ও পারচেজ কমিটি চেয়ারম্যান জনাব মাহবুবুল আনাম। বিসিবি সভাপতি এসংক্রান্ত বিষয়ে স্বাক্ষরদাতা নন।