ত্বকের বয়স কমিয়ে তারুণ্য ধরে রাখার ইচ্ছা সবারই থাকে। কিন্তু ব্যস্ত জীবনে ত্বকের যত্ন নেওয়ার সময় হয়তো সবার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। বয়স বাড়ার সঙ্গে ত্বকে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয়—যেমন বলিরেখা, ত্বকে ভাঁজ পড়া, উজ্জ্বলতা কমে যাওয়া ইত্যাদি। তবে কিছু সহজ অভ্যাস গড়ে তুললে ত্বকে বয়সের ছাপ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। শুধু ত্বকের বাহ্যিক পরিচর্যা নয়, ভেতর থেকেও যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখা যায়। এখানে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করা হলো, যেগুলো ত্বকের বয়স কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।
- পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস
সুস্থ ত্বকের জন্য সঠিক ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত জরুরি। ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। ভিটামিন সি ত্বককে সতেজ ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে এবং এটি পাওয়া যায় বিভিন্ন ফল যেমন কমলা, কিউই, স্ট্রবেরি ইত্যাদি থেকে। এছাড়া শাকসবজি, বাদাম, মাছ এবং দানাশস্য ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। এসব উপাদান ত্বকের কোষ পুনর্নির্মাণে সহায়তা করে, যা ত্বকের বার্ধক্যপ্রক্রিয়াকে ধীর করে। অন্যদিকে, চিনিযুক্ত বা মিষ্টিজাতীয় খাবার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, তাই এই ধরনের খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যকর খাবার ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি দেয় এবং ত্বকের মসৃণতা বজায় রাখে।
- পর্যাপ্ত ঘুম
ঘুমের ঘাটতি ত্বকের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ত্বকের কোষ পুনরুদ্ধার হতে পারে না, যার ফলে ত্বক শুষ্ক ও প্রাণহীন হয়ে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত, যা ত্বকের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে। ঘুমানোর সময় শরীরের কোষগুলো পুনর্গঠনের কাজ করে, যা ত্বকের মসৃণতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। গভীর ঘুম ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে এবং বলিরেখার গঠন কমায়। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্বকে কোনোভাবেই অবহেলা করা উচিত নয়।
- মানসিক চাপমুক্ত থাকা
মানসিক চাপ ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। অতিরিক্ত মানসিক চাপ বলিরেখা ও ব্রণের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। নিয়মিত চাপের কারণে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমে যায় এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাই মানসিক চাপমুক্ত থাকার জন্য কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। যেমন—ব্যায়াম করা, যোগব্যায়াম করা, কিংবা নিজের পছন্দের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা। মানসিক চাপ কমিয়ে ফেলার মাধ্যমে ত্বক তারুণ্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়। মানসিক শান্তি ত্বকের সুস্থতা ও উজ্জ্বলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- সানস্ক্রিনের ব্যবহার
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি (UV rays) ত্বকের বার্ধক্য ত্বরান্বিত করে। তাই ত্বককে রোদ থেকে বাঁচানোর জন্য নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। বাইরে যাওয়ার আগে ত্বকে অন্তত এসপিএফ ৫০ বা তার বেশি মানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। সানস্ক্রিন সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে এবং ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখে। নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার ত্বকের বলিরেখা কমাতে এবং ত্বককে তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে।
- পর্যাপ্ত পানি পান
ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিন অন্তত আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। পানি ত্বকের কোষগুলোকে ভেতর থেকে আর্দ্র রাখে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়। পর্যাপ্ত পানি পান করলে ত্বক মসৃণ ও কোমল থাকে, বলিরেখার সম্ভাবনাও কমে যায়। পানি ত্বককে প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল রাখে এবং ত্বকের স্বাভাবিক নমনীয়তা বজায় রাখতে সহায়তা করে।