নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী শুরু থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাশে ছিলেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেছেন। সরকার পতনের পরও তিনি চুপ থাকেননি, বরং দেশ সংস্কারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজের মতামত ও পরামর্শ দিয়ে চলেছেন। এবার তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘দৈত্য’ হয়ে উঠতে কারা সাহায্য করেছে সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নিজের ফেসবুক পোস্টে ফারুকী প্রশ্ন করেন, “শেখ হাসিনাকে আমরা কীভাবে মনস্টার হয়ে উঠতে সাহায্য করলাম? কারা তাকে মনস্টার বানাল?” তিনি উত্তর দেন, “বাংলাদেশের তথাকথিত নাগরিক সমাজ।” তার মতে, “নাগরিক সমাজ ‘বিএনপি ঠেকাও’ মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে হাসিনাকে যা খুশি তা করার লাইসেন্স দিয়েছে।” তিনি বলেন, “এই আত্মসমালোচনা যদি নাগরিক সমাজ না করে, তাহলে ভবিষ্যতেও আমরা এরকম মনস্টার তৈরি করতে থাকব।”
ফারুকী মনে করেন, ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়ার মাধ্যমে কাউকে ঠেকানোই আসল পাপ। তিনি বলেন, “কেউ কাউকে ঠেকাতে চাইতেই পারে, সেটি তার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু সমস্যা হয় যখন এটি ভোট ডাকাতি বা ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়ার মাধ্যমে করা হয়।” তিনি উল্লেখ করেন, “এই ঠেকাঠেকির অধিদপ্তর থেকেই গুম-খুন, ব্যাংক লুট, এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল শেখ হাসিনাকে।”
ফারুকী আরও বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ জানে কখন কাকে ঠেকাতে হবে। ৯৬ সালে তারা বিএনপিকে ঠেকিয়েছে, ২০০১ সালে আওয়ামী লীগকে ঠেকিয়েছে, ২০০৮ সালে আবার বিএনপিকে ঠেকিয়েছে। এরপর জনগণকে আর সুযোগই দেওয়া হয়নি।”
তার মতে, “গরিষ্ঠের শাসন মানলে ভুল শক্তি নির্বাচিত হলেও, সমালোচনা করে, প্রতিবাদ করে, এবং পরবর্তী নির্বাচনে তাকে ঠেকানোর সুযোগ রয়েছে। এটাই গণতন্ত্র।”
ফারুকী সতর্ক করে বলেন, “যদি কেউ মনে করে, আমি আর আমার অনুসারীরাই দেশের ভালোটা সবচেয়ে ভালো বুঝি, তাহলে সে আরেকটি হাসিনা হয়ে উঠার পথে রয়েছে।”
এর আগে, ৩ আগস্ট ফারুকী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘এক দফা’ দাবিতে লাখো ছাত্র-জনতার জমায়েতের একটি ভিডিও শেয়ার করে লেখেন, “আমরা এখানে ছিলাম, এই রকম এক এবং অভিন্ন। সেখান থেকে কি একটু পিছলে যাচ্ছি? এখনও সময় আছে, আবার এক এবং অভিন্ন হওয়ার।”