দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর পর ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাককে হারিয়ে যুক্তরাজ্যের ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা হতে চলেছেন লেবার নেতা কিয়ের স্টার্মার। কিন্তু কে এই কিয়ের স্টার্মার?
আসুন তবে জেনে নিই, নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে।
পেশায় আইনজীবী ৬১ বছর বয়সী কিয়ের স্টার্মারের জন্ম ১৯৬২ সালে লন্ডনে। কট্টর লেবার সমর্থক সেবিকা-কারিগর জুটির পরিবারের চার সন্তানের মধ্যকার একজন হিসেবে স্টার্মার বেড়ে ওঠেন দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের সারেতে। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই কট্টর বামপন্থী ধারার রাজনীতিতে আকৃষ্ট হয়ে তিনি সম্পৃক্ত হন লেবার পার্টির যুব সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রমে।
পরে লিডস এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অধ্যয়ন করে ২০০২ সালে ব্রিটেনের মানবাধিকার আইজীবী, ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ডিরেক্টর অফ পাবলিক প্রসিকিউশন এবং ২০১৫ থেকে স্থায়ীভাবে রাজনীতিবিদ হিসেবে বর্ণাঢ্য কর্মজীবন শুরু করেন স্টার্মার। ২০১৪ সালে তিনি ব্রিটেনের রানীর কাছে হতে লাভ করেন ‘নাইট’ উপাধি।
স্টার্মার প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ২০১৫ সালে লন্ডনের হবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাস হতে। কট্টর বামপন্থী লেবার নেতা জেরেমি করবিন তাঁকে অভিবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সরকারের কার্যকলাপ নজরে রাখতে ‘শ্যাডো হোম সেক্রেটারি’ (ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) হিসেবে নিয়োগ দেন। ব্রেক্সিটের পর তিনি পান ‘শ্যাডো ব্রেক্সিট মন্ত্রী’-র দায়িত্ব।
পরে ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি ১৯৩৫ সালের পর সবচেয়ে লজ্জাজনকভাবে পরাজিত হলে জেরেমি করবিন পদত্যাগ করেন। পার্টির নেতৃত্বে আসেন কিয়ের স্টার্মার।
নেতৃত্বে এসেই জল ও জ্বালানি কোম্পানির জাতীয়করণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষাদানের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে লেবার পার্টির দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যাওয়া নেতাকর্মীদের পুনরায় একত্রিত করে এবার তিনি দীর্ঘ এক যুগ পর যুক্তরাজ্যে অবসান ঘটালেন কনজারভেটিভ শাসনের। এখন তাঁর সমাজপন্থী আদর্শে ভর করে দেশটির জনগণের বেহাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে ঘুরে দাঁড়ায়— সেটিই দেখার বিষয়।