রুশাইদ আহমেদ: চলতি গ্রীষ্মে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রেজাউল করিম।
তিনি জানান, বিদ্যমান বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম সচল রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট রয়েছে এবং গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য কোনো সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন তিনি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মো. রেজাউল করিম বলেন, বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো প্রতিদিন গড়ে ১৪,০০০ থেকে ১৪,৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, যেখানে দৈনিক গড় চাহিদা প্রায় ১৫,০০০ মেগাওয়াট। ২০২৫ সালের গ্রীষ্মে সর্বোচ্চ চাহিদা ১৭,৮০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত উঠতে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। তুলনামূলকভাবে, ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ১৬,৪৭৭ মেগাওয়াট।
বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ এক কর্মদিবসে দেশে ১১,৯৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে, তখন চাহিদা ছিল ১৪,৪৫১ মেগাওয়াট। সংস্থাটি জানায়, গ্রীষ্মে বিদ্যুতের ঘাটতি ৭৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত হতে পারে, তবে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। তবে ঝড়-তুফান বা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কিছুটা লোডশেডিং ঘটতে পারে বলেও উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটি।
সাম্প্রতিক সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে দুইটি এলএনজি কার্গো আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গত মার্চ মাসেও যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি থেকে এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া, কাতার ও ওমানের সঙ্গেও দীর্ঘমেয়াদি গ্যাস সরবরাহ চুক্তি রয়েছে বাংলাদেশের।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বাসা ও উপাসনালয়গুলোতে এয়ার কন্ডিশনারসমূহের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে করে দৈনিক ২,০০০ থেকে ৩,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় সম্ভব হতে পারে বলে উল্লেখ করেন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর গরম মৌসুমে বিদ্যুৎ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য। এ ছাড়া, নানা সময়ে ঘটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং ট্রান্সফরমার নষ্ট হওয়াসহ যান্ত্রিক ও কারুগরি ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে এসব পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার সচেষ্ট রয়েছে।