রাবি প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘ চার বছরেও কমিটি ঘোষণা করতে পারিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদল। বর্তমান আহবায়ক কমিটির অনেকের ছাত্রত্ব না থাকার কারণে বারবার বিতর্কিত হচ্ছে দলটি।
ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের ‘খ’ ধারায় বলা হয়েছে, আহ্বায়ক কমিটি অবশ্যই তিন মাসের মধ্যে সম্মেলন সম্পন্ন করবে এবং ‘গ’ ধারায় বলা হয়, কোনো কারণে আহ্বায়ক কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্মেলন করতে ব্যর্থ হলে এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাবিতে ২০২১ সালের ১৬ জুলাই ৩১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। যেখানে সুলতান আহমেদ রাহীকে আহ্বায়ক এবং শামসুদ্দিন চৌধুরী সানিনকে সদস্য সচিব করা হয়েছিল৷ এছাড়াও কমিটির ১৫ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ১৪ জনকে আহ্বায়ক সদস্য ঘোষণা করেছিলেন। সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটি তিন বছর পর সম্মেলন করতে সক্ষম হলেও চার বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়নি। এমনকি কেন্দ্রও এখন পর্যন্ত কোনো সিন্ধান্ত নেয়নি।
এছাড়াও বর্তমানে মোট ৩১ জনের মধ্যে নিয়মিত ছাত্রত্ব আছে মাত্র ৬ জনের এবং রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন মাত্র ১৯ জন। দীর্ঘদিন নতুন কমিটি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ সংগঠনটির অনেক নেতা-কর্মী। সংগঠনটির কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে বহিরাগত শিক্ষার্থীদেরও।
হতাশা প্রকাশ করে রাবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ তাহের রহমান বলেন, রাবি ছাত্রদলের সাংগঠনিক কাঠামো গতিশীল করার কথা অনুভব করেই হাসিনার আমলে ২০২৪ সালের ১০ মে তারিখে আমাদের কর্মী সম্মেলন হয়েছে। যেখানে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শ্যামল মালুনের নেতৃত্বে রাবি ছাত্রদলের সম্মেলন হয়। জুলাই অভ্যুত্থানে হাসিনার পতন হওয়ার নয় মাস পরেও কমিটি ঘোষণা হয়নি। কী কারণে হয়নি, সে বিষয়ে আমরা অবগত নয়।
জুলাই বিপ্লবের পর সংগঠনটির শৃঙ্খলা ও আচরণ ভঙ্গের কারণ দেখিয়ে অনেক নেতাকর্মীকে অব্যাহতি ও বহিষ্কার আদে দেওয়া হয়। কেউ কেউ আবার রাজনীতি ছেড়ে চাকরি করছেন। বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির ২৯ জনের ১০ জনই রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতাকর্মী অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রদলের বর্তমান আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে মোটা অংকের অর্থ দিয়েই এই আহবায়ক কমিটি ধরে রাখছেন। জানা যায় রাহীর ছাত্রত্ব শেষ হয় কমিটি ঘোষণার আগেই।
এবিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমদ রাহী বলেন, কমিটির বিষয়ে কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত আসবে । তবে আশা করি খুব শীঘ্রই রাবিতে কমিটি ঘোষণা করা হবে। যারা বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের ভূমিকা রেখেছে এবং যোগ্য নেতৃত্ব যাচাই-বাছাই করে তা প্রকাশ করা হবে।
অর্থের বিনিময়ে কমিটি আটকে রাখার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে আমার মতো আহবায়কের টাকায় চলার মতো দুর্দিন আসেনি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সম্পাদক বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে রাখতে পারছিলেন বলেই তারা আজকে পবিত্র দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হচ্ছেন।