বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, ভারতের প্রভাব কমতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, ‘ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয়, বরং শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিল। আর সেই সম্পর্কই এখন ব্যর্থ হয়েছে।’
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক নিবন্ধে ড. ইমতিয়াজ এ মন্তব্য করেন। নিবন্ধে বলা হয়েছে, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার পেছনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ থাকতে পারে।
প্রথমত, তিনি সম্ভবত তার অভ্যন্তরীণ নির্বাচনী এলাকায় ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন এবং ভারতীয় জনগণকে আশ্বস্ত করতে চেয়েছিলেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আমাদের অপ্রত্যাশিত কিছু মোকাবিলা করতে হবে।’ তার এই ‘অপ্রত্যাশিত’ শব্দটি থেকে ধারণা করা যায়, তিনি মূলত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিবর্তনকে বোঝাতে চেয়েছেন, যা ভারতের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
নিবন্ধে আরও বলা হয়েছে, ভারতের এই প্রতিক্রিয়া মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে সতর্ক করার উদ্দেশ্যেও হতে পারে। ভারতের মতে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল। তাই, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই বার্তাটি দিতে চেয়েছেন যে, বাংলাদেশে পরিবর্তন হলেও ভারত পুরোপুরি প্রস্তুত।
তৃতীয় কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে যেভাবে ভারত বাংলাদেশকে নিয়েছিল, এখন তারা আর সেই একইভাবে নিতে পারছে না। বাংলাদেশে নতুন শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে ভারতকে ভিন্নভাবে কাজ করতে হবে।
যদিও এই তিনটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, তবে এখন বল ভারতের কোর্টে। তারা বাংলাদেশকে কীভাবে মোকাবিলা করবে, তা আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। যদি জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হয়, তবে সেই বৈঠক থেকে বোঝা যাবে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে চলেছে। তবে এটা নিশ্চিত যে, ভারতের কাছে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার থেকে ভিন্ন, তাই তাদের সঙ্গে সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।