বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি সপ্তাহব্যাপী রেজিস্ট্যান্স উইকের সাথে একত্মতা পোষণ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সংহতি সমাবেশ এবং ‘রোড মার্চ’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে একত্রিত হয়ে এ সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারে ঢাকা_আরিচা মহাসড়ক অভিমুখে ‘রোড মার্চ’ কর্মসূচি করেন তারা।
সংহতি সমাবেশে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. খো: লুৎফুল এলাহী বলেন, ১৫ জুলাই গভীর রাতে আমার শিক্ষার্থীদের উপর সন্ত্রাস বাহিনী যে হামলা চালিয়েছিল সেই আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থান নেয় কিন্তু নির্লজ্জ বেহায়া উপাচার্য গেট পর্যন্ত খোলেনি, ছাত্রদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে তিনি কতিপয় তোষামোদকারীদের নিয়ে উল্লাসে মেতে ছিলেন। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বাহিনী যখন গেটের বাহির থেকে শিক্ষার্থীদের উপর পেট্রোল বোমা মারতেছিল, তখন শিক্ষার্থীদের বাঁচার আকুতি, আর্তচিৎকারে বাতাস ভারী হয়ে উঠলেও উপাচার্যসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক সেখান থেকে গেটের বাহিরে চলে যায় এবং সন্ত্রাস বাহিনীকে গেটের ভিতরে প্রবেশ করার সূযোগ করে দেয়। অভিযুক্ত শিক্ষকদের যারা স্ব স্ব পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তাদের শুধু পদত্যাগ করলেই হবে না, রাষ্ট্রীয় আইনে তাদের নামে মামলা করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
সাভার শিল্পকলা একাডেমির সাবেক উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের তালুকদার বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, উনসত্তরের গনঅভ্যুত্থান দেখেছি, একাত্তরের যুদ্ধ দেখেছি, যুদ্ধ পরবর্তী আন্দোলন দেখেছি, কিন্তু ৫ই আগস্টের যে গন অভ্যুত্থান ছাত্ররা করেছে তা শুধু আমার জীবনে নয় পুরো বাংলাদেশের জন্য, পৃথিবীর জন্য একটি ইতিহাস হয়ে থাকবে যেখানে বাংলাদেশের তরুণসমাজ তাদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে। আবার মনে করি, এদেশের ছাত্রদের উপর হাত তুলে যে স্বৈরাচারী শাসন, অন্যায়-অবিচার করে টিকে ছিলো সেগুলো দূর করে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখে তরুনেরা, তাদের সে স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে ইনশাল্লাহ।
রোড মার্চ’ কর্মসূচিতে সমাপনী বক্তব্যে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম বলেন, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামী দুঃশাসন আমি প্রত্যক্ষ দেখেছি কিভাবে আওয়ামী শাসকরা জনগণের উপরে নির্যাতন চালাচ্ছিল। আওয়ামীলীগের দুঃ-শাসন আমাদের তিলে তিলে কুড়ে কুড়ে মেরে ফেলেছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাগ্রত হয়েছিল আমাদের ছাত্রসমাজ। জুলাইতে এসে এইযে আন্দোলন হল, অবশেষে সফল হল তাই ছাত্র সমাজকে আজ আমি স্যালুট জানাই। ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুমকি দিয়েছে আগামীকাল ঢাকায় রোড মার্চ করার জন্য, তারা নাকি ক্যু করবে তাদের সাথে একত্মতা পোষণ করে জাহাঙ্গীরনগরের স্বৈরাচারী দোসররা আগামীকাল রোড মার্চ করার জন্য ঘোষণা দিয়েছে। আমরা আগামীকাল সতর্ক থাকব একজনও যেন রোড মার্চ করতে না পারে। আমাদের সংহতি সমাবেশের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে ধর্ম, বর্ণ, এবং জাতিগত ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করা।
রবিউল/এমএ//