সম্প্রতি সফল ভারতীয় জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মানদানার একটি অশ্লীল ভিডিও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে। যা ছিলো ডিপফেক প্রযুক্তি দিয়ে বানানো একটি ভুয়া ভিডিও।যা নিয়ে রাশমিকা মানদানা খুবই হতাশা প্রকাশ করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ (সাবেক টুইটার) মিজ মানদানা লিখেছেন, “সত্যি কথা বলতে, এ ধরনের ঘটনা শুধুমাত্র আমার জন্য নয় সবার জন্যই খুব আশঙ্কাজনক।”
অভিনেত্রী আরও লিখেছেন, আজকাল যেভাবে প্রযুক্তির অপব্যবহার হচ্ছে, তাতে শুধু তিনিই নন, আরও অনেকেই বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।”আজ, একজন নারী এবং অভিনেতা হিসাবে, আমি পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে কৃতজ্ঞ যাঁরা আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে সুরক্ষিত রেখেছেন। আমি সত্যিই ভাবতে পারছি না স্কুলে বা কলেজে পড়াকালীন এমন কিছু ঘটলে আমি কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতাম,” তিনি ঐ পোস্টে লেখেন।
আজ আমরা জানবো ডিপফেক প্রযুক্তি কি, কিভাবে কাজ করে ,এই প্রযুক্তি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত
***ডিপফেক ভিডিও কি?
ডিপফেক কি জানার আগে সিন্থেটিক মিডিয়া সম্পর্কে জেনে নেয়া জরুরি। সিন্থেটিক মিডিয়া শব্দটি কোনো ধরণের ডাটার কৃত্রিম উৎপাদন, বিকৃতিকরণ অথবা পরিবর্তন, সামগ্রিকভাবে এই সবকিছুকে বুঝাতে ব্যবহার করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এটি করা হয় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের মাধ্যমে। ডিপফেক হচ্ছে এক ধরণের সিন্থেটিক মিডিয়া।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি জনপ্রিয় হওয়ার সাথে সাথে এর অপব্যবহারও দিন দিন বাড়ছে। সম্প্রতি, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও তৈরি করা হচ্ছে, যা ‘ডিপফেক’ ভিডিও নামে পরিচিত। ডিপফেক এমন একটি প্রযুক্তি যাতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে অডিও বা ভিডিওতে কারচুপি করা সম্ভব।
সহজ ভাষায়, এআই ব্যবহার করে এই কৌশলের সাহায্যে ভুয়া ভিডিও তৈরি করা যায়, যা দেখতে অবিকল আসলের মতো । এই কারণে এর নামকরণ করা হয় ডিপফেক। বর্তমানে ছবির পাশাপাশি ভিডিও তেও একজনের মাথা অন্য একজনার মাথায় নিয়ে গিয়ে লাগানো সম্ভব। যেখানে একজনের শরীরের সঙ্গে আরেকজনের মুখমন্ডলকে লাগানো হয়। আর সেখানে দেখে মনে হয় সেই মানুষটিই কথা বলছে। আর এখানে আপনি সেই ভিডিওটি দেখে বলতে পারবেন না যে, এই ভিডিওটি নকল,বানানো বা ডিপফেক ভিডিও। যেমনভাবে আমরা কোন একটি ফটোতে এডিট করার মাধ্যমে একজনের মাথা কেটে নিয়ে অন্য একজনের মাথায় নিয়ে লাগালে কেউ বুঝতে পারে না।
ধরুন, আপনার সামনে একটি ভিডিও আসলো যেখানে দেশের গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যাক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছেন। একদম হুবহু দেখতে, এমনকি তার গলার স্বরটিও অবিকল একই রকম। সঙ্গত কারণেই আপনি বিশ্বাস করলেন এবং সেটি শেয়ার দিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত জানতে পারলেন ভিডিওটি সত্যি না, বানোয়াট। ভয়াবহ বিষয়টি হচ্ছে, আপনি বুঝতেই পারেন নি সেটি বানোয়াট। একেই বলে সিন্থেটিক রিয়ালিটি। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, ডিপফেক বা নিঁখুত মিথ্যা।
***ডিপফেক ভিডিও কেনো বানানো হয়?
প্রথম ডিপফেক প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয় পর্নোগ্রাফিক কনটেন্ট তৈরি করতে গিয়ে। পর্নোগ্রাফিতে এই কৌশলটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের চেহারা পাল্টে দিয়ে সাইটে অশ্লীল কনটেন্ট পোস্ট করা হয়। ডিপট্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে অনলাইনে পাওয়া ডিপফেক ভিডিওর ৯৬ শতাংশই অশ্লীল ভিডিও। এ ছাড়া বিনোদনের জন্যও এই কৌশল ব্যবহার করা হয়। এই ডিপফেক ভিডিওগুলির উদ্দেশ্য দর্শকদের চোখের সামনে সেটা তুলে ধরা, যা বাস্তবে ঘটেইনি।
ডিপফেক এখন রাজনীতিতেও ব্যবহৃত হচ্ছে। নির্বাচনে, রাজনৈতিক দলগুলি একে অপরকে আক্রমণ করার জন্য ডিপফেক কৌশলের ব্যবহার করে। ডিপফেক ভিডিওর মাধ্যমে কোন একজন রাজনীতিবিদ ও অন্যদলের প্রতিহিংসার শিকার হতে পারে। যে কারণে কোন দেশের মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সময়ও ডিপফেক ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে।
***ডিপফেক ভিডিও কিভাবে বানানো হয়
ডিপফেক ভিডিও এমন একটি ভিডিও, যেটি খালি চোখে দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নকল; কিন্তু আসলে এটি একটি মিথ্যা ভিডিও। কারণ এখানে ঠোঁটের নড়াচড়া থেকে শুরু করে সকল অঙ্গ ভঙ্গি এবং মানুষের ছায়ার ও নকল করা হয়। আর এগুলোর জন্য ব্যবহার করা হয় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট বা ডিপ লার্নিং কে। যেখানে একটি ভিডিও নকল হওয়া সত্বেও সেটি দেখতে এবং শুনতে আসল মনে হয়।
ডিপফেক ভিডিওকে বানানোর জন্য কাজে নেওয়া হয় অনেক জটিল অ্যালগরিদম কে। যেগুলো নিজেই নিজের ভুল থেকে শেখে; অর্থাৎ এই এআই গুলো কে যতই বেশি ব্যবহার করা হবে এগুলো ততই ভালো ফলাফল দিবে। যেখানে সেই প্রোগ্রামটি যত বেশি ব্যবহার করে মিথ্যা ভিডিও তৈরি করা হবে, সেখানে পরবর্তী ভিডিওগুলো ততবেশি নির্ভুল এবং সূক্ষ্মভাবে তৈরি করা হবে। অর্থাৎ, পরবর্তী ভিডিওগুলো ধরা আরো কঠিন হয়ে পড়বে এটি আসল নাকি নকল। আর এভাবে করে সময় যাবার সঙ্গে সঙ্গে সেই ডিপফেক প্রোগ্রামটি নিজের ভুলগুলোকে সংশোধন এবং পরবর্তীতে আরো বেশি বুদ্ধিমান হয়ে উঠবে।
আজকের দিনে যার কাছে একটি কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট রয়েছে সে নিজেই ফেক ভিডিও বানাতে পারবে। আর এটির জন্য অনেক অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েবসাইট ও রয়েছে। যেগুলোর প্রত্যেকটি ব্যবহার করার জন্য অর্থ গুনতে হয়। আর এটি ব্যবহার করার মাধ্যমে যে কেউ যে কারো ভিডিও নকল করতে পারবে। যে কেউ কারো সম্বন্ধে কোন খারাপ প্রচারণা চালাতে পারবে। তবে এটি সম্পূর্ণ বেআইনি ও অবৈধ।
***ডিপফেক ভিডিও কোন কোন আকারে আমাদের সামনে আসতে পারে।
কয়েকটি উপায়ে ডিপফেক আমাদের সামনে আসে:
টেক্সচুয়াল ডিপফেক- এখন প্রায়ই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে বিভিন্ন নিবন্ধ, ই-মেইল এমনকি গবেষণাপত্র পর্যন্ত তৈরি করা হচ্ছে। এই সবই টেক্সচুয়াল ডিপফেক।
ডিপফেক ভিডিও এবং ছবি- ডিপফেকের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত এবং জনপ্রিয় হচ্ছে ভিডিও এবং ছবি। টেকনোলজি এতোটাই এগিয়েছে যে কারোও একটি ছবির উপর ভিত্তি করে সম্পূর্ণ ডিপফেক ভিডিও তৈরি করে ফেলা সম্ভব। আর ছবি বিকৃতি তো এখন খুবই সহজ কাজ।
ডিপফেক অডিও- ডিপফেকের মাধ্যমে শুধু ছবি বা ভিডিও না এমনকি একজন মানুষের কণ্ঠস্বর পর্যন্ত নকল করা সম্ভব।
সামাজিক মাধ্যমে ডিপফেক- একজন টিকটকার আছেন যিনি অভিনেতা টম ক্রজের ডিপ ফেক তৈরির মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছেন। সম্পূর্ণ একটি টিকটক একাউন্টে শুধু টমের ডিপ ফেক ভিডিও। একইভাবে অন্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতেও এভাবে নকল একাউন্ট তৈরি করে ফেলা সম্ভব হয়ে থাকে।
লাইভ ডিপফেক- বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন লাইভেই ডিপফেক তৈরি করা যায়। এর মাধ্যমে কেউ ভিডিও কল দিয়ে তার চেহারা এমনকি কন্ঠস্বর পালটে নিজেকে ভিন্ন কেউ দাবি করতে পারে। এমন একটি ঘটনা ঘটেছিলো ইউক্রেনের কিভের মেয়রকে নিয়ে। কেউ একজন তার চেহারা নকল করে ইউরোপের বিভিন্ন মেয়রদের কল দিয়ে কথা বলেছিলো।
***ডিপফেক ভিডিও চেনার উপায়
বর্তমানে ডিপফেক ভিডিও অনেক সাধারন পর্যায়ে রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে ডিপফেক ভিডিও গুলো ধরা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। তবে বর্তমানের যেসব অভিজ্ঞরা ডিপফেক ভিডিও তৈরি করছে, তাদের ভিডিওগুলোর নকল ধরা অনেক কঠিন হয়ে পড়ছে। যেখানে বর্তমানে আমাদের খালি চোখে দেখে বোঝার উপায় নেই এই ভিডিওটি আসল নাকি নকল। তবে কোন ভিডিওর মাঝে কথার সঙ্গে মুখের নড়াচড়ার অমিল, ঘাড় এবং কপালের অংশে ব্লার থাকা এসব বিষয়গুলো আমরা লক্ষ্য করতে পারি।
যতই দিন যাবে ততই ডিপফেক ভিডিও এর মান উন্নত হতে থাকবে। যেখানে দিন দিন ডিপফেক ভিডিও শনাক্ত করা আরো বেশী কঠিন হয়ে পড়বে। কেননা ডিপফেক ভিডিওর সফটওয়্যারটি দিন দিন নিজে তার ভুলগুলো কে সংশোধন করে নেয় এবং সে অনুযায়ী পরবর্তীতে আউটপুট দেয়। যেখানে ডিপফেক ভিডিওতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কে ব্যবহার করা হয়।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে তৈরি করা এই নকল ভিডিওগুলিকে চিনতে কিছু উপায় রয়েছে। নিরাপদ থাকতে চলুন জেনে নেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভিডিও শনাক্তকরণ পদ্ধতি-
ভিডিওতে ব্যক্তির শারীরিক গঠন এবং মুখের অভিব্যক্তি পর্যবেক্ষণ করা
মুখের দিকে ভালো মনোযোগ দিতে হবে। হাই-এন্ড ডিপফেক ম্যানিপুলেশনগুলি প্রায় সবসময়ই মুখের রূপান্তর হয়। একটি ‘ডিপফেক’ ভিডিও চিনতে, প্রথমে একজন ব্যক্তির শারীরিক গঠন, শরীরের নড়াচড়া এবং মুখের অভিব্যক্তি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কারণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি মানুষের শরীরের সব অংশের ভিডিও নিখুঁতভাবে তৈরি করতে পারে না। আর তাই যদি কোনো ভিডিও নিয়ে আপনার সন্দেহ থাকে, তাহলে আপনার উচিত সেখানকার মানুষের নাক, কান, পা ও হাতের আকৃতি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা। গাল এবং কপালের দিকেও লক্ষ্য করে দেখতে হবে। মুখের সাথে ঠোঁটের নড়াচড়ার অসঙ্গতি থাকলে বুঝতে হবে ভিডিওটি ভুয়া।
ভিডিওতে কি অস্বাভাবিক কিছু আছে?
ভিডিও চালানোর সময় হঠাৎ কোনও অংশ ঝাপসা হয়ে গেছে কিনা তা সাবধানে পর্যবেক্ষণ করা উচিত। বিশেষ করে ভিডিওতে দৃশ্য বা আশেপাশের ব্যক্তির চেহারা বা বিভিন্ন বস্তুর গঠন বিকৃত হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে।চোখ এবং ভ্রুগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য করতে হবে। চোখের ছায়াগুলো ঠিকভাবে সরছে কি না বা তাদের নড়াচড়া স্বাভাবিক কি না তাও দেখতে হবে।
কথা বলার সময় ঠোঁটের নড়াচড়া মিলছে কি না
ডিপফেক ভিডিওগুলি প্রায়শই মনোযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করে সনাক্ত করা যায় যে ব্যক্তির ঠোঁটটি ভয়েসের সাথে মেলে কিনা। কারণ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডিপফেক ভিডিওতে কথা বলার সময় ঠোঁট মেলে না। এ ছাড়া কণ্ঠস্বর ওঠানামা করলেও বুঝতে হবে ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
ভিডিও উৎস কি তা যাচাই করুন
ডিপফেক ভিডিওগুলি সাধারণত অজানা বা জাল অ্যাকাউন্ট দ্বারা প্রকাশ করা হয়। আর তাই যদি কোনো ভিডিও নিয়ে আপনার সন্দেহ থাকে, তাহলে আপনার উচিৎ এর উৎস পরীক্ষা করা।
স্মার্ট টুল ব্যবহার করুন
ডিপফেক ভিডিও চেক করার জন্য অনলাইনে বেশ কিছু টুল আছে। এসব টুল ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ভিডিও দ্রুত শনাক্ত করা যায়।
***ডিপফেক ভিডিও কেন এত বিপদজনক?
অনেকে এটিকে ডিজিটাল যুগের নিউক্লিয়ার বোমার সঙ্গেও তুলনা করেন। যেখানে এটি পারমাণবিক বোমার ক্ষতির মতোই মানুষের জীবনকে ক্ষতির মধ্যে ফেলে দেয়।
কোন একটি প্রযুক্তি আবিষ্কার হলে সেটির কিছু ভালো দিক এবং খারাপ দিক থাকে। তবে ডিপফেক ভিডিও এমন একটি প্রযুক্তি যার উপকারিতা বা ভালো দিক বলতে কিছুই নেই। ডিপফেক ভিডিও মানুষের উপকার বলতে কিছুই করে না, বরং এটি অনেক মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। যেখানে এই প্রযুক্তি থেকে মানুষ তার ক্ষতি ছাড়া কোনো উপকার ই আশা করতে পারে না।
ডিপফেক ভিডিও এর ক্ষতির বেশি সম্মুখীন হয়ে থাকে সেলিব্রিটি, রাজনীতিবিদ কিংবা কোন শিল্পীরা। তবে বর্তমানে সেলিব্রিটি এবং রাজনীতিবিদ এরা ছাড়াও বহু মানুষের ভিডিওর শিকার হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ডিপফেক ভিডিওর ক্ষেত্রে এটিই সবচাইতে খারাপ দিক।
বর্তমান সময়ে ডিপফেক ভিডিও পর্ণগ্রাফিতে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। যেখানে বিভিন্ন সেলিব্রিটিদের ভিডিও বা মুখের আকৃতি পর্নোগ্রাফির ভিডিওতে লাগানো হয়। কোনো একজন সেলিব্রিটি পর্ণগ্রাফিতে অভিনয় না করেও তাকে সেই খাতায় নাম লেখাতে হতে পারে। ভাবুন তো, কোন একজন ব্যক্তি পর্নোগ্রাফিতে অভিনয় না করেও সেই ব্যক্তি যদি একজন পর্নো অভিনেত্রী এর খেতাব পেয়ে যায় তবে ব্যাপারটি কেমন হয়। তার জীবনটা একেবারে দুর্বিষহ হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।এখানে শুধুমাত্র কোন সেলিব্রিটিরা তাদের লক্ষ্য পরিণত হচ্ছে তা নয়। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অভিনেত্রীদের ও বিভিন্ন ইফ্লুয়েন্সারদের কেও টার্গেট করা হচ্ছে ফেক পর্নোগ্রাফির ভিডিও বানানোর ক্ষেত্রে।
ডিপফেক ভিডিওর মাধ্যমে যে শুধুমাত্র কোন ভিডিও তৈরি করা হয়, তা নয়, এর মাধ্যমে কোন ছবি থেকে শুরু করে কারো ভয়েস পর্যন্ত নকল করা সম্ভব। যা আরো বেশী বিপদজনক।
*** শেষ কথা, ডিপফেক ভিডিও এর এই প্রযুক্তিটি বর্তমানে আমাদের জীবন থেকে বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তবে আমাদের সচেতনতা এবং নৈতিক মূল্যবোধ থাকা উচিত। আপনি যে সবকিছুই দেখুন না কেন, সে গুলোকে চোখ বুজে বিশ্বাস করবেন না। সেই ভিডিও সম্পর্কে নিজে রিসার্চ করুন এবং কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যা সেটা বিবেচনা করুন। আপনি কোন অবাস্তব কিছু দেখে নিজে বিচার-বিশ্লেষণ করে সেটিকে বিশ্বাস করুন।
সৈয়দ সাঈদ হাসান
বিডিএন৭১, ডেস্ক