ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক শরীরের আপত্তিকর স্থানে স্পর্শ করাসহ ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একই ইনিস্টিটিউটের শিক্ষক নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এই অধ্যাপক সব বর্ষেই এক দুইজন নারী শিক্ষার্থীকে টার্গেট করেন। তবে পরীক্ষায় ফেইল করিয়ে দেওয়ার শঙ্কায় কেউ অভিযোগ করার সাহস পায় না।
অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মানববন্ধন করে ইন্সটিটিউটের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে উপাচার্যের কাছে একটি লিখিত আবেদন জমা দেন।
অভিযোগে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, গত ১১ নভেম্বর ইনস্টিটিউটের অফিস কক্ষে ব্যক্তিগত কাজে যাই আমি। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষক আমাকে তার কক্ষে ডাকেন। এরপর ওই শিক্ষকের কক্ষে গেলে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে শুরু করেন। নানা রকম সাহায্যের প্রলোভন দেখান; একা দেখা করার প্রস্তাব দেন। এসময় আমার মোবাইল ফোন নম্বর নেন। জোর করে আমার অনলাইনে যুক্ত হন। উনার কথা অসংলগ্ন লাগলে আমি চলে যাওয়ার জন্য চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াই। তখন তিনি নিজ আসন ছেড়ে আমার কাছে উঠে আসেন। আমাকে যৌন নিপীড়ন করেন। তিনি বার বার বলতে থাকেন, তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। তিনি আমার শরীরের আপত্তিকর স্থানে স্পর্শ করেন, ঘটনার আকস্মিকতায় কিছু বুঝে উঠতে না পেরে আমি ভয়ে তার কক্ষ হতে দৌড়ে পালিয়ে যাই। এরপর আমি এতোটাই ভয় পাই যে মেসে ফিরে যাওয়ার শক্তিও পাচ্ছিলাম না, তাই আমি ক্যান্টিনে কিছু সময় অবস্থান করি। কিছু সময় পর আমাকে পুনরায় ফোন করে তার সাথে দুপুরের খাবার, হালকা নাস্তা বা চা খাওয়ার প্রস্তাব দেন। তখনও আমাকে বারবার এই বিষয়ে যেন কাউকে না জানাই, তা সাবধান করতে থাকেন। আমি মানসিক ট্রমা থেকে বের হতে না পেরে প্রচণ্ড ভয়ে গ্রামের বাসায় চলে যাই। যার কারণে আমি চলমান পাঠদান থেকে বিরত থাকি। এমন সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
ভুক্তভোগী ছাত্রী আরো বলেন, “এ ঘটনায় মানসিক ট্রমা থেকে বের হতে পারছি না। নিরাপত্তাহীনতায় বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। ফলে ক্লাস করতে পারিনি। এখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। চলতি বছরে জানুয়ারি মাসেও এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে উঠেছিল। এর আগে ২০১৪ সালের মে মাসে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।