ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা যান তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবক। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ নিয়ে গেলে সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ক্যাম্পাসের ভেতর নিরীহ একজন মানুষের সাথে এমন পাশবিক আচরণ সারা দেশকে নাড়িয়ে দেয়।
এবার এই সত্য ঘটনা নিয়ে নাটক নির্মিত হয়েছে। নাটকের নাম ‘তোফাজ্জলের শেষ ভাত’। এটি পরিচালনা করেছেন খলিলুর রহমান কচি। অভিনয় করেছেন ইমরান হাসো, সানজিদা, আলমগীর কবির প্রমুখ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নাটকটির পোস্টার প্রকাশিত হয়েছে। এই ঘটনা পর্দায় তুলে ধরার জন্য নির্মাতাকে সাধুবাদ দিয়েছেন অনেকেই। আবার অনেকেই ভাবছেন এই ঘটনা পর্দায় তুলে ধরার মাধ্যমে দেশের নেতিবাচক দিককে সামনে আনা হচ্ছে।
একজন সাংবাদিক ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আপনি কোন শোক পালন করবেন, কোনটা এড়িয়ে যাবেন, কোন ইস্যুতে চোখ বুজে থাকবেন কোনটায় সরব থাকবেন, কোন ঘটনায় মাতামাতি করবেন কোন ঘুমিয়ে কাটাবেন, কোন মৃত্যু নিয়ে চলচ্চিত্র বানাবেন, কোন মৃত্যু নিয়ে উপহাস করবেন- তা যেমন একান্ত আপনার ব্যক্তিগত বিষয়, তেমনি প্রকাশ পেয়ে যায় আপনি কার দোসর কার শ্বশুর। নাটক সিনেমা নিঃসন্দেহে ব্যবসা। আবু সাইদ, মুগ্ধের মতো জাতীয় বীরদের বাদ দিয়ে আপনি যখন তোফাজ্জলকেই বাছাই করেন নাটক সিনেমার জন্য তখন বোঝা যায় আপনার কাছে এটা ব্যবসার চেয়ে বেশি কিছু।’
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে গত ১৮ সেপ্টেম্বর গণপিটুনিতে নিহত হন তোফাজ্জল হোসেন। এদিন সন্ধ্যা পৌনে ৭টা থেকে তিন ঘণ্টা আটকে রেখে তাকে নির্যাতন করা হয়। প্রথমে হলের গেস্টরুমে তোফাজ্জলকে মারধোর করে তাকে খাওয়ানোর জন্য ডাইনিং রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। খাওয়ানোর পর অন্য একটি গেস্টরুমে নিয়ে গিয়ে আবারও নির্যাতন শুরু হয়ে তার ওপর। যার এক পর্যায়ে মৃত্যৃবরণ করেন তোফাজ্জ্বল।
তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলি ইউনিয়নে। কয়েক বছর ধরে তোফাজ্জল মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন। তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আট শিক্ষার্থীদের ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত বহিষ্কার, তাদের সিট বাতিল, হল প্রভোস্টকে অব্যাহতিসহ বেশ কিছু জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।