রাজধানীর বেসরকারি আইচি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ নিয়ে পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা স্বীকার করার পরও শিক্ষার্থীদের অনত্র মাইগ্রেশনের প্রক্রিয়া নিয়ে করছেন কালক্ষেপণ। এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে হতাশা।
জানা যায়, ২০১৭ সালে বেসরকারী মেডিকেল কলেজ স্থাপনা ও পরিচালনা নীতিমালা-২০১১ (সংশোধিত) এর বাস্তবায়নের জন্যে উক্ত কলেজকে কিছু শর্তারোপ করে, যা প্রতিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে আইচি মেডিকেল কলেজকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ হতে এমবিবিএস কোর্সে কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করণ বিষয়ে পত্র প্রদান করে। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে মন্ত্রণালয় জারিকৃত সাময়িক ভর্তি স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আবেদন করে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ হতে শিক্ষার্থী ভর্তি করান। কিন্তু উক্ত ছাত্র/ছাত্রীবৃন্দ বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক তালিকাভুক্ত হয়নি। এমতাবস্থায় ছাত্র/ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। শিক্ষার্থীদের নিশ্চিত ভবিষ্যতের আশায় অন্য মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশন দিতে কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনো আপত্তি নেই বলে অনাপত্তিপত্র জারি করেন।
কলেজ ট্রাস্টি কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান রাকিব বিন জামান বলেছেন মাইগ্রেশন সংক্রান্ত কাজ দ্রুত এবং সহজ প্রক্রিয়ায় করার লক্ষ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।
কলেজ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে আইচি মেডিকেল কলেজের ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থী আহসানউল্লাহ জানান,”আইচি মেডিকেল কলেজ ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। উক্ত মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে প্রথম তিনব্যাচ ভর্তি করিয়ে বিএমডিসি নীতিমালা অনুযায়ী সাময়িক অনুমোদন পায়। কিন্তু কলেজের যথেষ্ঠ মানউন্নয়ন না করায় ২০১৭-১৮ সেশনে মন্ত্রণালয় থেকে ভর্তি নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়।মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা চ্যালেন্জ করে মহামান্য আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করে ২০১৮-১৯ সেশন থেকে শিক্ষার্থীদের জালিয়াতি,প্রতারণা,জাল বানোয়াট কাগজপত্র দেখিয়ে ভর্তি করায়।
এখন পর্যন্ত ২০১৮-১৯,২০১৯-২০,২০২০-২১,২০২১-২২ এই চার শিক্ষাবর্ষে প্রায় ১৫০ এর অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি আছেন।২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত মালিকপক্ষকে কলেজের অনুমোদন ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট চাপ দেওয়া হয়। সর্বোপরি অনুমোদন ফিরিয়ে আনতে ধারাবাহিকভাবে আমাদের আন্দোলন ২০২০ থেকেই চলে আসছে। এমনকি ২০২৩ সালে অনুমোদন ফিরিয়ে আনতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে প্রেশার দিলে, তারা ক্ষিপ্ত হয়ে কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে বহিরাগত ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের উপর হামলা করে।সমস্যা সমাধান করতে ৬ মাসের সময় নেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ৬ মাসের কথা বললেও ২০২৪ সালের জুন মাসে এসেও তারা কলেজের অনুমোদন আনতে ব্যর্থ হোন।এতে শিক্ষার্থীরা ২০২৪ সালের জুন মাস থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্যে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করলে ২৮ আগষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজ চালাতে ব্যর্থ এবং অপারগতা প্রকাশ করে চলমান শিক্ষার্থীদের অন্যত্র মাইগ্রেশন করে দিতে অনাপত্তিপত্র জারি করে এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের আবেদন গ্রহন করেন।১৫০ জন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে দ্রুত মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ চাই।”