নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন করে সরব হয়ে উঠেছে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো। দীর্ঘদিন নানা মতভেদে বিভক্ত থাকলেও, এবার তারা এক ছাতার নিচে আসার চেষ্টা করছে—নির্বাচনী জোট গঠনের লক্ষ্যে। লক্ষ্য একটাই—ইসলামী মূল্যবোধকে ভিত্তি করে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি করা।
বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নির্বাচনী ঐক্যের বার্তা এসেছে পরিষ্কারভাবে। দলের মুখপাত্র অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ জানিয়েছেন, “ইসলামপন্থীদের ভোট বিভক্ত হলে লাভবান হবে কেবল বিরোধীরা। তাই সময় এসেছে একত্রিত হওয়ার।” তার এই বক্তব্যে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নীতিগতভাবে জোট গঠনে আগ্রহ দেখিয়েছে।
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ জানিয়েছেন, “আমরা চাই, ন্যূনতম রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি জোট গঠন হোক, যেখানে ইসলামী দলগুলো স্বকীয়তা বজায় রেখে নির্বাচনমুখী হতে পারবে।” জমিয়তের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, “আমরা আলোচনার টেবিলে আছি, সবদিক বিবেচনায় জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের মতে, “এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো ইসলামপন্থীদের মধ্যে আস্থা ও ঐক্য গড়ে তোলা। নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সেটাই করছি।”
এদিকে, ইসলামী দলগুলোর নেতারা বিএনপির সঙ্গেও মতবিনিময় করছেন, যদিও তা এখনো নির্বাচনী জোটের পর্যায়ে পৌঁছায়নি। মূলত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, নির্বাচনী রোডম্যাপ, এবং সরকারের আচরণ নির্ধারণ করবে এই ঐক্য কতদূর এগোবে।
সবশেষে, একটি বিষয় স্পষ্ট—এইবারের নির্বাচন ঘিরে ইসলামী দলগুলো আর শুধু পেছনের সারির খেলোয়াড় হতে চায় না। তারা সক্রিয়, সংঘবদ্ধ ও রাজনৈতিকভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে চায়। জোট গঠন সফল হলে তা দেশের নির্বাচনী রাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।