নওগাঁ প্রতিনিধিঃ গত শনিবার নওগাঁ সরকারি কলেজের ছাত্র রফিউল ইসলাম রিফাতকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১১ টায় নওগাঁ সরকারি কলেজ কাম্পাসে সাধারন ছাত্রের ব্যানারে এ কর্মসুচি অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্ররা জানান, গত মঙ্গলবার শহরের কেডির মোর এলাকার ডাকবালোর সামনে ফুটপাতের উপর পাথর ফেলে পথচারির যাতায়াতের অসুবিধা সৃষ্টি করে নতুন ভবন নির্মান কারী প্রতিষ্ঠান যার সাথে শিশিরের জড়িত। রিফাত সেটি দেখে মোবাইলে ভিডিও ধারন করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দিয়ে প্রতিবাদ জানায়। শিশির বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় কলেজে রিফাতকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শিশির সহ কয়েক জন মিলে তাকে এলোপাতারি লাঠি দিয়ে আঘাত করে চলে যায়। আহত অবস্থায় ছাত্ররা উদ্ধার করে রিফাতকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ সামসুল হক ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারি প্রফেসর মুনিরুজ্জামান বিদ্যুৎ ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তারা কোন প্রতিবাদ করনি বলেও জানান সাধারন শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রনেতা ফজলে রাব্বী জানান, সকালে আমি কলেজে বসে ছিলাম। দেখলাম রিফাত এবং শিশির দূরে দাড়িয়ে কথা বলছে। এরপর রিফাত আমার কাছে আসার একপার্যায়ে শিশির রিফাতকে ডাকে এবং লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে। আমি আটকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় একা থাকার কারনে। কলেজে বহিরাগত ছেলে ঢুকে কিভাবে কলেজ ছাত্রের গাঁয়ে এভাবে হাত উঠায়। সেসময় সামসুল স্যার এবং বিদ্যুৎ স্যার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছেন কিন্তু কোন প্রতিবাদ করেনি। উল্টো তারা বলছেন আমরা এ বিষয়ে কোন কিছু জানি না।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে রিফাত জানান, আমি মানুষের সমস্যা দেখে ভিডিও করি। কে বা কারা পাথর ফেলেছে সেটি আমি জানতাম না। হঠাৎ আমি কলেজে গেলে তারা কয়েকজন পথরোধ করে আমাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং আমি গুরুত্বর আহত হই।
মারামারির বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রনেতা শাহারিয়া শিশির জানান, আমি শুধু তার সাথে কথা বলছিলাম। কথা বলার এক পর্যায়ে রিফাত বেল্ট নিয়ে আমাকে মারতে আসলে আমি সেটা প্রতিহত করি। এরপর সে আবার ব্রেঞ্চ নিয়ে আমাকে মারতে আসলে বিদ্যুৎ স্যার তাকে আটকানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে দুইজনার মধ্যে হাতাহাতি হয়। তারা যেভাবে আমাকে নিয়ে মিথ্যা প্রচারনা চালাচ্ছে এটার জন্য আমি দায়ী নই।
ঘটনার সময় কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ সামসুল হক উপস্থিত ছিলেন কিন্তু তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। তার এমন কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি দূর থেকে দেখেছি কিন্ত কি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মারামারি হয়েছে সেটি আমি জানি না। আমি ঘটনার পর থানায় অভিযোগ করেছি। তাদের বিরুদ্ধে কলেজের প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করব।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, মারামারির বিষয়ে আমি শুনেছি। ঘটনার পর কলেজের অধ্যক্ষ আমাকে মুঠোফোনে জানান, কে বা কাহারা অধ্যক্ষকে মুঠোফোনে হুমকি দিয়েছে। মারামারির বিষয়ে থানায় এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
আজ মানববন্ধন শেষে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সাধারন ছাত্ররা অনশনের বসে। তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবে বলে জানান তারা। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ছাত্ররা অনশনে রয়েছে।