নিজস্ব প্রতিবেদক
ভাইপোর সম্পত্তি দখল করে নিজের বলে দাবি ও প্রচারণার অভিযোগে নতুন হওয়া ভূমি অপরাধ প্রতিকার আইনে ঢাকায় একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি সম্প্রতি কার্যকর হওয়া ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩ এ দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাকিল আহমেদ এর আদালতে মোঃ শিমুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি মামলাটি দায়ের করেন। অত্র মামলায় তার আপন ফুফু জামিনা বেগম, ফুফাতো বোন রাজিয়া সুলতানা এবং ফুপাতো বোনের জামাই আব্দুর রহমান রহমানকে আসামি করা হয়েছে। আদালত পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে বাদী পক্ষের শুনানি করেন বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের অ্যাডভোকেট আহম্মেদ সুলতান শাহরিয়ার ও ইনজামাম উল ইসলাম খান। এছাড়াও ড্রাফটিং ও ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এর ধারা সমূহ ব্যাখ্যায় সহযোগিতা করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট সাদ্দাম হোসাইন আবির।
এবিষয়ে মামলার বাদী মোঃ শিমুল হোসেনের আইনজীবী বিডিএন৭১ নিউজকে জানিয়েছেন যে, বাদীর ফুফু তাদের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করে আসছেন। পরবর্তীতে বাদী তার ফুফুকে তাদের জায়গা ছেড়ে দিতে বললে তার ফুপু জামিনা বেগম, তার মেয়ে রাজিয়া সুলতানা ও মেয়ের জামাই আব্দুর রহমানের সহযোগীতায় বাড়িটি দখল করে রাখেন এবং বাড়িটি হাজারিবাগ এলাকার ভূমিদস্যু মাহবুবুল আলমের কাছে বিক্রি করবেন বলে বায়না চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বলে এলাকায় প্রচার করছেন এবং বিবাদীরা অত্র সম্পত্তিতে অবস্থিত বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেছেন। বাদী মোঃ শিমুল হোসেন বাধা দিতে গেলে তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী আরো বলেন যে, বিবাদী জামিনা বেগম পূর্বেই ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত তার সম্পত্তি অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী আহমেদ সুলতান শাহরিয়ার বলেন, আসামিগণ ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ এর ৪(১)(ক)/৭(১)/১০/১৬ ধারা এবং প্রাণ-নাশের হুমকি সহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়ায় দন্ডবিধির ৫০৬ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
জানা গেছে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩’ পাশ করে গেজেট জারি করে সরকার। এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ আইনটির বিস্তারিত তুলে ধরেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
ওই সময় তিনি বলেন নতুন আইনে ভূমি প্রতারণা, জালিয়াতি অবৈধ দখলের মামলা ১৮০ দিন বা ৬ মাসের মধ্যে বিচার শেষ করার বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ভূমি প্রতারণা, জালিয়াতি, অবৈধ দখলের মতো ১২টি অপরাধ চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনের ফলে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ কমবে এবং জমিজমা সংক্রান্ত মামলাও অনেক কম যাবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।