নানা ত্যাগ, তিতীক্ষা ও চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়। মানুষ ফিরে পায় তার স্বাধীনতা। অন্য সব জায়গায়র মতো স্বাধীনতা ফিরে পায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাইতো স্বাধীন ক্যাম্পাসে উচ্ছ্বাসিত শিক্ষার্থীরা মনের মাধুরী মিশিয়ে স্বপ্নের ফ্লোরে বিজয়ের আঙ্গিকে জানান দিচ্ছে নিজেদের স্বাধীনতাকে। এ যেনো রং তুলির আঁচড়ে ফুটে ওঠা স্বাধীনতার ভাষা। তুলির প্রতিটা আঁচড়ে জানান দেয় বিজয়ের বার্তা। এক একটা গ্রাফিতি যেনো স্বাধীনতার স্মারক। গত কয়েক দিনব্যাপী এমনই সৃজনশীল গ্রাফিতি দেখা মিছলে স্বাধীন বাংলা প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়)।
দেখা যায়, ছাত্রছাত্রীরা তাদের অর্জিত স্বাধীনতা উদযাপনের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে ভোর হতে দুপুর কিংবা বিকেলে এঁকে চলেছে নানারকমের গ্রাফিতি। ক্যাম্পাসের টিএসসিসি, প্রধান ফটক, বিভিন্ন অনুষদের দেয়ালে ও আবাসিক হলগুলোতে আলপনার ছোয়ায় শিল্পকর্ম আঁকছেন শিক্ষার্থীরা। আলপনা, গ্রাফিতি ও প্রতিবাদী বিভিন্ন স্লোগান আর কবিতার লাইনে ভিন্ন এক রূপ ধারন করেছে সবুজে ঘেরা ১৭৫ একরের ক্যাম্পাস।
শিক্ষার্থীদের এ কার্যক্রম জানান দিচ্ছে এই বাংলাদেশ সবার। ঠাঁই নেই স্বৈরাচারের। ছাত্র সমাজ একতাবদ্ধ সব অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে। প্রতিটি রং, প্রতিটি রেখা, প্রতিটি গ্রাফিতি বলছে নতুন এক স্বাধীনতার কথা; এক ঐতিহাসিক বিপ্লবের কথা। জানান দিচ্ছে প্রভাতের আলোকিত সূর্যোদয়ের কথা ও নব উদ্যমে নতুন স্বপ্নের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার কথা।
গ্রাফিতি কারিগর মোহাম্মদ হাদি বলেন, গ্রাফিতির মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক চেতনাকে তুলে ধরছি। বিশ্ববিদ্যালয়কে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলা ও বিবর্ণ দেয়ালে আমরা আগামীর স্বপ্ন আঁকছি। সবাই মিলে সুন্দর সমাজ ও দেশ গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা স্বেচ্ছায় নিজস্ব অর্থায়নে ও কিছু ফান্ডিংয়ে একটি নিরপেক্ষ বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নে দেশপ্রেমের বাণী দেয়ালে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।
আরেক অংকন শিল্পী শৈলী আক্তার বলেন, ‘গ্রাফিতির মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ সুর ফুটে ওঠে। ন্যায়ের কথা, সাধারণ মানুষের দাবির কথা উঠে আসে। গ্রাফিতি ও আলপনা করার পেছনে আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিলো ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাস্তা ও দেয়ালে যে পলিটিকাল চিহ্নগুলি ছিলো সেগুলো মুছে ফেলে আমাদের কথাগুলো তুলে ধরা এবং কোন রকম বাঁধা ছাড়াই আমরা সেটা করতে সক্ষম হয়েছি।’
তামিম\আরএ