ঢালিউড তারকা নুসরাত ফারিয়া বেশ কিছুদিন ধরে নতুন কোনো ছবিতে অভিনয় করছেন না, তবে তিনি এখনও আলোচনায় রয়েছেন। এই আলোচনার কারণ হল, তিনি একটি জুয়ার অ্যাপের শুভেচ্ছাদূত হয়েছেন। সম্প্রতি ওই অ্যাপের একটি গানে তাকে দেখা গেছে, যেখানে তিনি জুয়ার প্রচারণা চালিয়েছেন।
গানটির কিছু অংশে, যেমন ‘সবাই মিলে খেলব, আনন্দ করে ফিরব, সাবধানে খেলে যাব…’ নুসরাত ফারিয়া নাচ ও গানের মাধ্যমে জুয়ার প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। গানের শেষাংশে তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে পথচলায় আমি ভীষণ রোমাঞ্চিত।’ শুভেচ্ছাদূত নুসরাত ফারিয়াকে নিয়ে তৈরি এই গানটির ইউটিউব ভিউও উল্লেখযোগ্য। ভিডিওর বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘শুভেচ্ছাদূত নুসরাত ফারিয়ার অফিশিয়াল গানের ভিডিও। বাংলাদেশের নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম…।’
জুয়ার অ্যাপের শুভেচ্ছাদূত হওয়ার বিষয়টি এবং সম্প্রতি প্রকাশিত গানটি সম্পর্কে জানতে গত সোমবার একাধিকবার নুসরাত ফারিয়াকে কল করা হয় এবং খুদে বার্তা পাঠানো হয়, কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আজ বুধবার পর্যন্ত তিনি ফোনকল গ্রহণ করেননি এবং খুদে বার্তারও উত্তর দেননি।
এর আগে জুয়ার প্রতিষ্ঠানের পণ্যদূত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল ঢাকাই সিনেমার আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনির। প্রতিষ্ঠানটির একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে তাকে মডেল হিসেবে দেখা যায়।
বাংলাদেশের আইনে যেকোনো ধরনের জুয়া ও বাজি ধরা নিষিদ্ধ এবং এর প্রচার-প্রচারণাও নিষিদ্ধ। তবে বিভিন্ন সময়ে অপু বিশ্বাস ও মাহিয়া মাহির মতো তারকাদের নাম জুয়ার ওয়েবসাইটের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে শোনা গেছে।
জানা গেছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে তারকাদের বিজ্ঞাপনচিত্রে ব্যবহার করা হয়। এতে সাধারণ মানুষ তারকাদের কথায় প্রলুব্ধ হয়ে জুয়ার ফাঁদে পড়তে পারে। অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন এ বিষয়ে বলেছেন, ‘জুয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো কোটি কোটি টাকার অবৈধ ব্যবসা করে এবং সেখান থেকে কিছু অংশ বিজ্ঞাপনে ব্যয় করে। তারকারা এ বিষয়টি নৈতিকভাবে ভাবছেন না।’
অনলাইনে জুয়ার বিস্তার নিয়ে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। টিআইবি দাবি করেছে যে, অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার হচ্ছে।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদে জুয়া খেলা নিষিদ্ধ। ২০২২ সালে সাকিব আল হাসান ‘বেট উইনার নিউজ’ নামে একটি বেটিং ওয়েবসাইটের পণ্যদূত হয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। বাংলাদেশের আইনে জুয়া বা জুয়ার প্রচারণা নিষিদ্ধ হওয়ায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তখন শক্ত অবস্থান নেয়। বিসিবির চাপের ফলে সাকিবকে ‘বেট উইনার’ এর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে হয়।