খুবি প্রতিনিধি
কোলাহলে পরিপূর্ণ শহরে মানুষের কমতি না থাকলেও রয়েছে সঙ্গ দেওয়া মানুষের অনেক অভাব। আর এই সমস্যাকে সমাধানের লক্ষ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী তৈরি করেছে রোবট “জি” । যেটি মূলত বয়স্ক ব্যক্তিদের নিঃসঙ্গত দূর করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) ডিসিপ্লিন এর অধ্যাপক ড. মো. শামীম হাসানের তত্ত্বাবধানে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী চিরঞ্জিত বিশ্বাস রোহিত এবং সামিয়া ইন্তেসার প্রায় ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে তাদের গবেষণা প্রজেক্ট হিসেবে তৈরি করেছে রোবটটি। সম্পূর্ণ ভয়েস নিয়ন্ত্রিত এ রোবটটি বয়স্ক মানুষদের নিঃসঙ্গতায় সঙ্গ দেওয়ার পাশাপাশি বাচ্চাদের শিক্ষা দান ও ধর্মীয় শিক্ষায় ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছেন তারা।
উদ্ভাবকরা জানান, সেন্টার প্রসেসর হিসেবে আমরা জেটসন ন্যানো ইউজ করেছি। মূলত আমাদের প্রজেক্টটি ছিলো বয়স্ক ব্যক্তিদের নিঃসঙ্গতার সহিত হতে পারবে এমন একটি রোবট তৈরি করা। রোবটটি সম্পূর্ণ ভয়েস নিয়ন্ত্রিত। রোবটটি ব্যবহারকারীর কথা শুনতে পারে এবং প্রতিউত্তর করতে পারে। এছাড়া মানুষের নির্দেশনা অনুযায়ী চলাচল করতে পারে, কথা বলতে পারে, গান শুনাতে পারে, যে কোন বিখ্যাত ব্যাক্তি সম্পর্কে তথ্য জানাতে পারে।এছাড়াও এটি বাচ্চাদের শিক্ষা দানের সহায়ক এবং ধর্মীয় শিক্ষার জন্য ব্যবহার করা যাবে। প্রয়োজন অনুযায়ী এটি আপডেট করা যাবে।
গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. মো. শামীম হাসান বলেন, বর্তমান বিশ্বে সবদিক বিবেচনা করলে রোবট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রোবট নিয়ে কাজ করাও ব্যয়বহুল যা অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টসাধ্য। তবুও আমরা চেষ্টা করেছি অল্প খরচে ভালো একটা প্রজেক্ট তৈরি করতে। এ রোবটটি যেমন বয়স্কদের নিঃসঙ্গতা কাটাতে ব্যবহার করা যাবে তেমন বাচ্চাদের শিক্ষায় ও ব্যবহার করা যাবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আছে যারা সুযোগ পেলে অনেক ভালো কিছু করবে কিন্তু অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে তারা পিছিয়ে যাচ্ছে। যদি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আরো সুযোগ করে দেয়া হয় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি এসব সেক্টর এগিয়ে যাবে।
উদ্ভাবকরা তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, শ্রদ্ধেয় শামীম স্যারের নির্দেশনায় দীর্ঘ নয় মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমের পরে এ রোবটি তৈরি করতে পেরেছি। রোবট নিয়ে কাজ করা সব সময় কৌতূহলপূর্ণ। আশা করছি সামনে আরো ভালো কিছু করতে পারবো। তারা এ দীর্ঘ সময়ে যারা পাশে থাকা সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান এবং সবার নিকট দোয়া কামনা করেন।
এইচ এম মাসুম হাসান
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়