কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যদি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা কোনো নিরপরাধ শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হয়, তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রক্টরিয়াল বডি তাদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে কুবি প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কোন নিরপরাধ শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হলে; তাকে অথবা তার সহপাঠী/অভিভাবককেবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সাথে যোগাযোগের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হলো। এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
এছাড়া বিজ্ঞতিতে আরো বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কোন নিরপরাধ শিক্ষার্থী যেন অহেতুক হয়রানির শিকার না হয় এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রক্টরিয়াল বডি সূত্রে জানা যায়, এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট তিনজন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের সবাইকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ছাড়িয়ে এনেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। এছাড়া অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে পুলিশ ঢুকলেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুরো আন্দোলন জুড়ে কোন পুলিশ ঢুকেনি। এছাড়াও আন্দোলন শেষে শিক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে পারে এ জন্য প্রায় প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাসের ব্যবস্থা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি সর্বশেষ ১৮ই জুলাই আহত শিক্ষার্থীর সংখ্যা অধিক হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ও এম্বুলেন্স প্রদান করেছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা আন্দোলনের প্রথম দিন থেকে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই প্রক্টরিয়াল বডি তাদের কল্যাণে বিশ্বরোডে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিল।তারপরেও কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমরা উপস্থিত না থাকলে হয়তো ব্যাপারটি আরো বাড়তো। সর্বশেষ আমরা তিনজন শিক্ষার্থীর গ্রেফতার হওয়ার খবর পাই। মাননীয় উপাচার্য স্যারের নির্দেশনায় ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে আমরা তাদের মুক্ত করি। সমন্বয়কদের সহযোগীতার কারনে আন্দোলনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্যকে প্রবেশ করতে হয়নি। সবশেষে বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের পাশে আমরা সব সময় আছি।’
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল শিক্ষার্থী আহত হয়েছে, তাদের সুচিৎিসা নিশ্চিতকরণ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয়ভার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহন করবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। একই দিন রাতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন প্রথমে থানায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের মুক্তির জন্য প্রচেষ্টা চালান এবং পরবর্তীতে আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালে পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘ আমরা সব সময় শিক্ষার্থীদের কল্যাণের কথা চিন্তা করেছি। নানা রকম চাপ থাকলেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন পুলিশ ঢুকতে দেয়া হয়নি। এছাড়া আমরাই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে হয়তো আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করবো বলে ঘোষণা দিয়েছে। সর্বশেষ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সহযোগিতায় তিনজন শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। আরো যদি কোন শিক্ষার্থী আটক থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে জানালে তারা ব্যবস্থা নিবে।’