পবিপ্রবি প্রতিনিধি: পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর হলের ডাইনিংয়ে খাবারের মান ও কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এতে ওই হলের ২১-২২ সেশনের সকল শিক্ষার্থী ডাইনিং বন্ধ রেখে স্ট্রাইক ঘোষণা করেছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে ডাইনিংয়ে পরিবেশিত ভাত ও মাংসের মধ্যে একাধিক মরা মাছি পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানান।
জানা গেছে, ঘটনার দিন রান্নার দায়িত্বে ছিলেন ডাইনিং কর্মচারী মোহাম্মদ কামাল ও সাহেব আলী। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, খাবারের মান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অসন্তোষ বিরাজ করছে। এছাড়া হল প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে কর্মচারীদের এমন আচরণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সম্মান উভয়ই হুমকির মুখে পড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়াও সকালে রান্না করতে না চাওয়া, রান্নায় অতিরিক্ত অপচয়, লাকড়ির পরিবর্তে সিলিন্ডার গ্যাস দিয়ে রান্না করতে চাওয়াসহ বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী শাহেদুল ইসলাম সাকিব বলেন,”আজকে ভাত নিতে গিয়ে দেখি বড় একটা পোকা। পরবর্তীতে ডায়নিংয়ের মামাকে ডেকে ভাত চেঞ্জ করে নিই। এরপর ইমরান (ডিভিএম ২০তম ব্যাচ) এসে বলে মাংসের মধ্যে মাছি। তখন ভাত রেখেই উঠে আসতে হয়েছে আমাদের। খাবারের দ্রুত মান উন্নয়ন হোক এটাই আমাদের দাবি।”
একই ব্যাচের অপর আরেক শিক্ষার্থী নাজমুল হুদা ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে বলেন, “আমরা প্রতিদিনের মতো ডাইনিংয়ে খেতে বসেছিলাম। একই টেবিলে আমি, সাকিব, মামুন ও ইমরান ছিলাম। ভাত নেওয়ার সময় সাকিব হঠাৎ বলল, ‘ভাতে মরা মাছি!’ সঙ্গে সঙ্গে ডাইনিং কর্মচারীকে ডেকে বিষয়টি দেখানো হয়। তখন কোনো ম্যানেজার উপস্থিত ছিলেন না। মাংসের বাটিতেও মাছি রয়েছে। পরে সেটিও যাচাই করে সত্যতা পাওয়া যায়।”
ডাইনিং ম্যানেজার মেহেদী হাসান ইমন বলেন, “আজকে ডাইনিং এ ভাত ও মাংসের বাটিতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মাছি পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে যারা রান্না ও পরিবেশনের দায়িত্বে ছিলো তাদের সাথে কথা বলা হয়েছে। তারা কেউই জানেন না কিভাবে ঘটনাটি ঘটেছে এবং একে অপরকে দোষারোপ করছেন। উল্লিখিত ঘটনার বিষয়ে হল প্রশাসনকেও অবগত করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান বলেন,” বিষয়টি ইতোমধ্যে আমি অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । ডাইনিং এর বাবুর্চিদের আগেও কয়েকবার এ বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে।”
বাবুর্চি পরিবর্তনের প্রসংঙ্গে তিনি বলেন, “এই ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট করবো।”
এছাড়া ডাইনিংয়ের ভর্তুকির প্রসংঙ্গে তিনি আরও বলেন,”সেন্ট্রাল থেকে প্রতি হলের ডাইনিংয়ের জন্যে বরাদ্দ আসলে সেটা এখানেও দেওয়া হবে।”
এধরনের সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেছেন। সমস্যা সমাধানে যথাযথ উদ্যোগ না নেওয়া হলে স্মারকলিপি প্রদান কিংবা অন্যান্য কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।