রুশাইদ আহমেদ: শ্রমজীবী মানুষের আত্মত্যাগ ও অধিকার আদায়ের দিন মে দিবস। প্রতি বছরের মতো এবারও ফিরে এসেছে এই ঐতিহাসিক ক্ষণ।
১৮৮৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে “৮ ঘণ্টা কাজ, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম, ৮ ঘণ্টা ব্যক্তিগত সময়” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নিজেদের অধিকার আদায়ে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন শ্রমিকেরা।
কিন্তু হে মার্কেট স্কয়ারের সেই ঐতিহাসিক আন্দোলনই রক্তে রঞ্জিত হয়ে উঠেছিল সরকারি বাহিনীর ক্রুদ্ধ আক্রমণে। আর তার থেকেই গোটা বিশ্বে লেখা শুরু হয় এক বিশাল পরিবর্তনের গল্পের।
তবে আফসোসের বিষয় হলো, এই ঐতিহাসিক ঘটনার প্রায় দেড়শ বছর পার হলেও আমাদের চারপাশে যাঁরা ঘাম ঝরিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিচ্ছেন— তাঁরা এখনও সব সময় সামনে আসেন না, থাকেন না আমাদের ক্যামেরার ফোকাসে।
কিন্তু আমরা জানি, শ্রমিক মানেই শুধু শ্রম নয়— তাঁর মধ্যে আছে আত্মমর্যাদা, সাহস আর সম্ভাবনার অপার মেলবন্ধন।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড তৈরি পোশাক শ্রমিকদের কথাই ভাবা যেতে পারে এ ক্ষেত্রে। তাদের কণ্ঠ যদি ন্যায্য মজুরি পাওয়ার দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে, সেটা কি অন্যায়? একইভাবে, একজন নির্মাণশ্রমিক যদি নিরাপদ কর্মপরিবেশ চান— সেটাও কি বিলাসিতা?
তাঁরা কি আদৌ সেই মহান মে দিবসের আন্দোলনকারীদের মতো ৮ ঘণ্টা কাজ আর ৮ ঘণ্টা বিশ্রামে কাটাতে পারবেন?
বর্তমানে আমরা অনেকেই নিছক ছুটির দিন হিসেবে ঘুমিয়ে বা ঘোরাফেরা করে এ দিনটা পার করি। হয়তো আমরা ভুলে যাই কী রকম আত্মত্যাগে গড়া এই দিনের গল্প।…
বিশ্বের প্রতিটা মানুষের মনে রাখা উচিত, মে দিবসের মাহাত্ম্য শুধু অতীতকে স্মরণ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো এমন এক সমাজ বিনির্মাণে উদ্যোগী হওয়া যেখানে শ্রমিকেরা থাকবেন সম্মানের আসনে। তাদের জীবনে থাকবে না কোনো শোষণ, অবমূল্যায়ন! তাহলেই শুধু একদিনের বদলে আমাদের প্রতিদিনের চেতনায় বেঁচে থাকবে মহান মে দিবসের অমোঘ বাণী!