ফেব্রুয়ারি মাস ছাড়া পরিষ্কার হয় না জবির শহীদ মিনার
ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন আয়োজনের সঙ্গে শহীদ মিনারগুলো পরিষ্কার করা হয়, কিন্তু বছরের অন্য সময়গুলোতে অবহেলায় পড়ে থাকে এ শহীদ মিনারগুলো। এমন চিত্র দেখা যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শহীদ মিনারে। ফেব্রুয়ারির আগমন ছাড়া পুরো বছরটি শহীদ মিনারটির অবস্থান শোচনীয় হয়ে থাকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা শহীদ মিনারটি পরিষ্কার করছেন, শ্যাওলা পরিষ্কার করে রঙ করা হচ্ছে। আশপাশও পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে যাতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মনে করেন, শুধু ফেব্রুয়ারিতেই নয়, সারা বছরই শহীদ মিনারটি পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। শহীদদের স্মৃতির প্রতীক হিসেবে শহীদ মিনারটির অবহেলা দুঃখজনক।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “শহীদ মিনার শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি ভাষা আন্দোলনের আত্মত্যাগের প্রতীক। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে পরিষ্কার করা হলেও সারা বছর এটি অবহেলিত থাকে, যা জাতীয় স্মৃতির প্রতি দায়িত্বহীনতার পরিচয়। শহীদ মিনার পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।” তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় সচেতন হতে হবে।
ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুর্শিদা বিনতে রহমান বলেন, “সব শহীদ মিনারই সম্মান জানানো জন্য তৈরি করা হয়েছে। আমরা বাঙালি, বাংলা ভাষা নিয়ে গর্ব করি। শহীদ মিনারকেও সম্মান করতে হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “ক্যাম্পাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব রেজিস্টারের অধীনে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা পালন করেন। আমরা একটি বজ্র নিষ্কাশন কমিটি করেছি, এবং এর মাধ্যমে কিছু কাজ হয়েছে, আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে।”
উল্লেখ্য, দেশের অন্যান্য শহীদ মিনারের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের স্থাপত্য শৈলীর পার্থক্যের কারণে বহিরাগতরা সেখানে জুতা পায়ে উঠে যান, খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলে চলে যান। শহীদ মিনারের গুরুত্ব শুধু ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে ওঠে, সেটিও শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কারণে।