সম্প্রতি একটি গবেষণায় ফ্লোরিডার দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে একাধিক বিলাসবহুল ভবন আশঙ্কাজনক হারে ভূমি দেবে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে।
মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত এ গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে গোল্ডেন বিচ থেকে মিয়ামি বিচ পর্যন্ত অন্তত ৩৫টি ভবন প্রায় তিন ইঞ্চি পর্যন্ত দেবে গেছে। উল্লেখযোগ্য ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে রিটজ-কার্লটন রেসিডেন্সেস, ট্রাম্প টাওয়ার-থ্রি, ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল বিচ রিসোর্টস এবং সার্ফ ক্লাব টাওয়ারস।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ভবন নির্মাণের সময় সৃষ্ট উচ্চমাত্রার কম্পন মাটির কণাকে সংকুচিত করে, যা ভূমি ধীরে ধীরে নিচে বসিয়ে দিচ্ছে। গবেষণার সহ-লেখক ফক অ্যামেলুং বলেছেন, এমন দেবে যাওয়া ভবন নির্মাণের পরপরই স্বাভাবিক হলেও, বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকলে তা গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
২০২১ সালে সার্ফসাইডের “চ্যামপ্লেইন টাওয়ার” আংশিক হেলে পড়ার পর এই গবেষণা শুরু হয়। যদিও ওই ভবনে দেবে যাওয়ার কোনো লক্ষণ আগেই পাওয়া যায়নি, সমুদ্রের তীরবর্তী অন্যান্য ভবন এবং এলাকাগুলোতে এমন ঘটনা দেখা গেছে।
উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভবনের ক্ষুদ্র পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা। বিশেষ করে ভবনের ব্যালকনি এবং ছাদের এয়ার কন্ডিশনার ইউনিটের মতো নির্দিষ্ট অংশ ট্র্যাক করে ভূমির গতিবিধি বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, সানি আইলস বিচের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের প্রায় ৭০ শতাংশ ভবনে দেবে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এর মধ্যে ২৩ শতাংশ ভবন গত এক দশকের মধ্যে নির্মিত।
দেবে যাওয়ার কারণ হিসেবে নির্মাণকালের কম্পনের পাশাপাশি, জোয়ারের পানির প্রভাব, ভারী ভবনের ওজন, মাটির প্রাকৃতিক সঙ্কোচন এবং উপকূল তৈরিতে ব্যবহৃত মাটির ভূমিকা রয়েছে।
গবেষকরা সতর্ক করেছেন, মিয়ামি একইসঙ্গে ভূমি দেবে যাওয়া এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সমস্যায় জর্জরিত। এই দুটি বিষয় একত্রে উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং ভূমি ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
ভার্জিনিয়া টেকের ভূতত্ত্ববিদ মনুচের শিরজাই বলেছেন, “ভূমি দেবে যাওয়া বা সমুদ্রপৃষ্ঠের বৃদ্ধি—যে কোনো পরিবর্তনই উপকূলীয় অঞ্চলে বড় ধরনের বন্যার কারণ হতে পারে।” গবেষণার এই ফলাফল ভবিষ্যতে আরও গভীর গবেষণার প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।
আরএস//বিএন