বাংলাদেশের সাহিত্যিক ও পাঠক সমৃদ্ধির এক মহৎ উৎসবের নাম হলো অমর একুশে বইমেলা।বইমেলা একটি সংস্কৃতির প্রবাহ, এই সাহিত্যিক সংস্কৃতি মেলা মূলত একটি অভিজ্ঞান।
১৯৭২ সালে প্রয়াত চিত্তরঞ্জন সাহা সর্বপ্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে এক বটতলার মাটিতে চট বিছিয়ে বত্রিশটি বই বিক্রি করে বইমেলার সূচনা করেন। এরপর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি একাই বইমেলা চালিয়ে যান। তিনি ১৯৭৫ সালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে বই বিক্রির অনুমতি লাভ করে। এরপর ১৯৭৮ সালে একে পূর্ণাঙ্গ বইমেলা হিসেবে স্বীকৃতি দান করেন সরকার। গ্রন্থমেলার জন্য সরকারিভাবে আইন পাস করা হয় ১৯৮৪ সালে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদ হওয়া সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরও অনেক শহীদদের স্মরণে বইমেলার নামকরণ করা হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। সেই থেকে আজ পর্যন্ত চলেছে গ্রন্থমেলার পথচলা। ২০১৪ সাল থেকে বইমেলার বড় একটি অংশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
২০২৪ সালের বইমেলার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘পড়ো বন্ধু গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।
এবছর অধিবর্ষ (লিপ ইয়ার) হওয়ার কারণে এবারের বইমেলা হতে যাচ্ছে ২৯ দিনের। এবার অমর একুশে বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট এলাকাজুড়ে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৭২টি প্রতিষ্ঠান ও ৭১০টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিতে ১০৩টি প্রতিষ্ঠান ও ১৪৭টি ইউনিট অংশগ্রহণ করেছে। তা ছাড়া এ বছর মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ করা হয়েছে।
একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি ইউনিট, অর্থাৎ মোট ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৯৩৭টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১লা ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩ টায় মাসব্যাপী বইমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছুটির দিন বেলা ১১ থেকে শুরু হবে মেলা। এছাড়া প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত চলবে। তবে দর্শক, ক্রেতা ও পাঠকেরা রাত সাড়ে আটটার পরে মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। ‘শিশুপ্রহর’ চলবে প্রতি শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত।
সমাপ্তিতে, একুশে বইমেলা বাংলাদেশের সাহিত্যিক সমৃদ্ধির একটি চিহ্ন হিসেবে দাগিয়ে দেয়, সম্মিলিত সাহিত্যিক জগতে একটি আলোর সৌন্দর্য ও বিকশন।
মাহফুজা শাহানা মাইশা
সাব এডিটর