২০২৪ সালে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন গেরুয়া শিবির উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ানোর অভিযোগের মুখে পড়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) মতো সংগঠনগুলো দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক মতাদর্শ ছড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ত্রিপুরার ঘটনা এবং পশ্চিমবঙ্গসহ অন্যান্য রাজ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ মিশনে হামলা
চলতি বছরের ২ ডিসেম্বর ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের কনস্যুলেটে হামলা চালায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলো। হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি এবং ভিএইচপির কর্মীরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলে এবং গেরুয়া পতাকা নিয়ে মিছিল করে। যদিও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছে, তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ঘটনা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ নীতি, ১৯৬১ সালের ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে।
ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সংকট
ভারত ও কানাডার সম্পর্কেও হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ করেন, ভারত সমর্থিত কিছু গোষ্ঠী কানাডার শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডে ভারতের ভূমিকা থাকতে পারে বলেও অভিযোগ করেন ট্রুডো। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়, যেখানে উভয় দেশ একে অপরের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে।
দেশের ভেতরে সহিংসতা
বছরজুড়ে বিহার, উত্তরপ্রদেশ এবং অন্যান্য রাজ্যে মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালিয়েছে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলো। রামনবমীর মিছিলের নামে মসজিদ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা এবং মুসলিমদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এসব সহিংসতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে।
বিজেপির নেতৃত্বে হিন্দুত্ববাদী চরমপন্থার এই উত্থান শুধু ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নয়, আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশের মিশনে হামলা এবং কানাডার সঙ্গে টানাপোড়েনের মতো ঘটনা ভারতের বৈশ্বিক ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।