ভারত থেকে ধেয়ে আসা পানির কবলে পড়া কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বন্যার্তদের সহযোগীতার জন্য তহবিল সংগ্রহে অবিরাম ছুটে চলেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে পানিবন্দী মানুষের সহযোগিতার জন্য অর্থ, পোশাকসহ বিভিন্ন সামগ্রী সংগ্রহ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো প্রতিদিন বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় টিম গঠন করে রওনা হচ্ছেন। এতে প্রায় ৪০টির অধিক সংগঠন অংশ নিয়েছে। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, শিক্ষার্থীরা প্রায় ৭ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা সংগ্রহ করেছেন এবং পোশাক ও ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহ করেছেন। এছাড়াও কুমিল্লায় বন্যা কবলিত এলাকার উদ্দেশ্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি এর একটি উদ্ধারকারী দল রওনা হয়েছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত নোয়াখালী জেলার শিক্ষার্থী ওয়াহেদ মির্জা জানান, গত চার যুগেও নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষ এরকম ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতি দেখে তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং চারদিকে ছোটাছুটি করছে। এই বন্যায় ঐ অঞ্চলের মানুষসহ তাদের সকল সম্পদ পুরোপুরি ক্ষতির কবলে। এই প্রেক্ষাপটে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে তারা বিভিন্ন ভাবে ফান্ড কালেক্ট করার উদ্যোগ গ্রহন করেছে এবং অবিরাম কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, বেশ কয়েক দিন যাবৎ ভারী বৃষ্টিপাত এবং ভারত থেকে আসা পানির চাপে নোয়াখালীর জেলা শহর , চাটখিল, কোম্পানিগঞ্জ, বেগমগঞ্জ ও সুর্নচরসহ প্রায় সকল উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে চলেছে। উক্ত বন্যার ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ সাইক্লোন সেন্টার, স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন উঁচু জায়গায় আশ্রয় গ্রহন করছে। দেশের এই দুর্যোগকালীন সময়ে দেশ-বিদেশের সকলকে বন্যার্তদের পাশে থাকার আহবান জানান।
আরেক শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল বলেন, মুহুরী নদীর বানে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলা যে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে, ইতিহাসে তার নজির নেই। মানুষের সম্পদ তো জলে বাসিয়ে নিয়ে গেছে, এখন এসব জেলার ৩৬ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচানো নিয়েই শঙ্কা। ভারত বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশ ভেসে যাচ্ছে এ নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা গণবিক্ষোভও দেখিয়েছেন ইতোমধ্যে। বন্যার এ খারাপ পরিস্থিতিতে আমরা ২২ আগস্ট থেকে বন্যার্ত মানুষের সাহায্যের জন্য শিক্ষার্থীদের সকল সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একযোগে ফান্ড সংগ্রহ করেছি, সেই টাকা দিয়ে বন্যার্ত মানুষের জন্য ঔষধ, খাবার সেলাই, বিশুদ্ধ পানি এবং শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করে যাচ্ছি এবং আমাদের শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে বন্যার্ত মানুষের উদ্ধারের জন্য গিয়েছে। তাই দেশ বিদেশের সবার কাছে আহ্বান থাকবে, আপনারা সবাই বন্যার্ত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসুন।
এমএ//