হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস—২০২৩ উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ হতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকাল ৬.৪৪ টায় প্রশাসনিক ভবনের সন্মুখে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভাইস—চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান । এরপর সকাল ৯ টায় প্রশাসনিক ভবনের সন্মুখে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন ভাইস—চ্যান্সেলর।
পরবর্তীতে সকাল ৯.০৫ টায় হাবিপ্রবি’র ভাইস—চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান—এর নেতৃত্বে টিএসসি’র সম্মুখ হতে বিজয় দিবসের বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস ও এর সামনের মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে সকাল সাড়ে ৯ টায় শহীদ মিনার বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন ভাইস—চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. সাইফুর রহমান, প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রশীদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ মাহাবুব হোসেন। ক্রমান্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডীনবৃন্দ, শিক্ষকগণের সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব, কর্মকর্তাগণের সংগঠন, হাবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ, কর্মচারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়াও বিজয় দিবসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১০ টায় টিএসসি প্রাঙ্গণে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন ভাইস—চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান। এরপর সকাল ১১.১৫ মিনিটে অনুষদ ভিত্তিক শিক্ষার্থীদের (ছাত্রী) অংশগ্রহণে ১ম সুলতানা কামাল স্মৃতি কাপ আন্তঃঅনুষদীয় ভলিবল প্রতিযোগিতা—২০২৩ এর চূড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় বিজ্ঞান অনুষদ এবং রানার্স আপ হয় বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ।
বাদ যোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে সকল শহীদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। দুপুর ২.৩৫ মিনিটে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষদভিত্তিক শিক্ষার্থীদের (ছাত্র) অংশগ্রহণে “বিজয় দিবস কাপ আন্তঃঅনুষদীয় ভলিবল প্রতিযোগিতা”—২০২৩ এর চূড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাবিপ্রবির ভাইস—চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম কামরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন শরীরচর্চা শিক্ষা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মাহাবুব হোসেন।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ভাইস—চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান বাণী প্রদান করেন। বাণীতে তিনি বলেন, আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। এ উপলক্ষ্যে হাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি মহান বিজয় দিবস ২০২৩ এর শুভেচ্ছা জানাই। বাঙালি জাতির জন্য অনন্য গৌরবে ভাস্বর এ দিন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝলমলিয়ে উঠেছিল বাংলার রক্তস্নাত শিশির ভেজা মাটি, অবসান হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সুদীর্ঘ চব্বিশ বছরের নির্বিচার শোষণ, ব না আর নির্যাতনের কালো অধ্যায়। মহান বিজয়ের এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত ও পরিচালিত হয়েছিল। আমি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি মহিয়সী নারী জাতির পিতার অনুপ্রেরণাদায়িনী বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব, শহীদ শেখ কামাল, শহীদ শেখ জামাল, শহীদ শিশু শেখ রাসেলসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানকারী জাতির সূর্য সন্তান ত্রিশ লক্ষ শহীদকে। বাংলাদেশের অগ্রগতির ভিত্তি রচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, এগিয়ে নিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে পিতার আদর্শ ধারণ করে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে এ পর্যন্ত তিনটি প বার্ষিকী পরিকল্পনা, দুটি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, ১টি শতবর্ষী পরিকল্পনা প্রণয়নসহ নানামুখি অর্থনৈতিক কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন, অর্থনৈতিক অ লসহ বেশকিছু বৃহদাকার প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছেন। ১৯৭১ সালে অর্জিত যুদ্ধবিধ্বস্ত এই বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ, যা ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৯তম এবং ২০৫০ সাল নাগাদ ২৩তম অর্থনীতিতে উন্নত দেশে পরিণত হবে। আর ২০২৬ সালেই বাংলাদেশ ‘মধ্যম আয়ের দেশ’ এবং ২০৪১ সালেই ‘উন্নত দেশ’ হিসেবে বিশ্বে আত্মপ্রকাশ করবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে তার বড় প্রমাণ হলো গত কয়েক বছর ধরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। বর্তমান মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৬৫ মার্কিন ডলার। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বিশ্বের শীর্ষ কয়েকটি দেশের একটি আজ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতুর উদ্বোধন, উন্নয়নের অন্যতম মাইলফলক।
নাঈম ইসলাম সংগ্রাম
হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়