ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মরদেহ আজ শুক্রবার রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তিনি বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ছয় মার্চ ইফতার কেনার জন্য ঢাকা ক্লাবে গেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই পড়ে যান। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে নিউরো আইসিইউতে রাখা হয় এবং তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
আজ সকালে ধানমন্ডির বায়তুল আকসা মসজিদে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তাঁর শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা অংশ নেন। জানাজায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক অত্যন্ত বিনয়ী ও সজ্জন মানুষ ছিলেন। তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’
জুমার নামাজের পর ধানমন্ডির ঈদগাহ মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, এরপর ঈদগাহ মাঠে তৃতীয় জানাজা হয়। জানাজার পর মরদেহ আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাঁর বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ১৯৫৩ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকার ধানমন্ডিতে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস ছিল নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষে ১৯৮০ সালে শিক্ষকতা শুরু করেন। ভারতের মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগীয় চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭তম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০১৭ সালে দায়িত্ব শেষ করে আবারও শিক্ষকতায় যোগ দেন। ২০২০ সালে অবসর গ্রহণের পর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান ও জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়নি, যা নিয়ে শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীরা সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তবে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো বাধা না থাকলেও পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্যাম্পাসে জানাজার আয়োজন করা হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘পরিবারের সিদ্ধান্তকে আমরা শ্রদ্ধা জানাই। জানাজার আয়োজন এবং দাফনের বিষয়গুলো তাঁদেরই নির্ধারিত ছিল।’