ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশি সহিংসতার প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার ভারত বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই বনধে বিজেপি কর্মীদের সাথে পুলিশ ও রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের সাথে সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩০ জনের বেশি।
বুধবার সকালে বিজেপির ‘‘বাংলা বনধ’’ কর্মসূচি শুরুর সাথে সাথে উত্তরবঙ্গের মালদা এবং আলিপুরদুয়ার জেলার কিছু অংশে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার রাজ্যের সচিবালয় নবান্ন অভিমুখে শিক্ষার্থীদের নবগঠিত সংগঠন ছাত্র সমাজ পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করে। এই কর্মসূচিতে রাজ্যের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থী-জনতার সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে বাংলা বনধ কর্মসূচি ঘোষণা করে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপি।
কলকাতার আর জি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের এই আন্দোলনে রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক গোষ্ঠীর সদস্যরা অংশ নিয়েছেন।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটি বলছে, বাংলা বনধের শুরুতে বুধবার সকালের দিকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় রেল ও সড়ক পথ অবরোধ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় কলকাতায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিকের তুলনায় কম দেখা গেছে। তবে বাজার ও দোকানপাট খোলা রয়েছে।
এছাড়া রাজ্যের স্কুল কলেজ চালু থাকলেও অনেক বেসরকারি অফিসে কর্মীদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বাংলা বনধে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের হামলায় উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার ভাটপাড়া এলাকায় বিরোধীদল বিজেপির অন্তত দুই কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, অ্যাঙ্গলো-ইন্ডিয়া পাট কারখানার পাশে একদল লোক বিজেপি কর্মীদের মারধর করেছেন।
এদিন উত্তর চব্বিশ পরগণার বনগাও রেলওয়ে স্টেশন, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার গোচারণ স্টেশন ও মুরশিবাদ রেলওয়ে স্টেশন অবরোধ করেছেন বিজেপি কর্মীরা। উত্তর চব্বিশ পরগণার ব্যারাকপুর রেলওয়ে স্টেশনে বিজেপি কর্মীদের সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হুগলি স্টেশনেও স্থানীয় রেললাইন অবরোধ করেছেন বিজেপি কর্মীরা।
এছাড়া পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় বসে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। মালদায় রাস্তা অবরোধ করায় বিজেপি কর্মীদের সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। পরে পুলিশ সেখানে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।