প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য আবাসিক হলে একটি করে আসন থাকার কথা থাকলেও ভর্তির পর ঠাঁই হতো গনরুমে। কিন্তু ২০২২ সালে করোনা পরবর্তী সময়ে এক রুমে কয়েকজন নবীন শিক্ষার্থীকে উঠিয়ে সেটাকে ‘বেটার গনরুম’ বলে দাবি করে কতৃপক্ষ।
এর ১ বছর পর জাবিতে ফিরেছে বেটার গনরুমের সেই চিত্র। আবাসিক হলে আসন বরাদ্দের কথা বলে গত ৩০ নভেম্বর অনলাইনে ক্লাস শুরু করে প্রশাসন। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ১ টি করে সিট বরাদ্দের কথা থাকলেও ‘বেটার গনরুমে’ ১ টি রুমে ৫-১৫ জন পর্যন্ত শিক্ষার্থী তোলা হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নবীন শিক্ষার্থীরা হলের বেটার গনরুমে ২ জনের সিটে ৫-৭ জন,৪ জনের সিটে ১২-১৪ জন করে শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। এটিকে বেটার গনরুমের পুনরাবৃত্তি বলে অবিহিত করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এবিষয়ে ৫২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আবু তায়েফ সপ্নীল বলেন, পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও আমাদের গনরুমে উঠানো হয়েছে। অথচ প্রশাসন আমাদের রুম দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৭ মাস পর আমাদের ক্লাস শুরু করলো,এটা আমাদের হতাশ করেছে।
জাবি ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন,ভিসি বলেছিলেন গণরুম জাদুঘরে যাবে। কোথায় তার জাদুঘর? নতুন করে চারটি হল উদ্বোধন হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের আসন দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। ফলে গণরুম ও গেস্টরুমে ৫১-৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা র্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছে। আবাসিক হলগুলোতে আসন সংকট রয়েছে মূলত অছাত্রদের হল থেকে বের করতে না পারার করণে। ৫২ তো দূরে থাক ৫১ ব্যাচকে মিনি গণরুমের নামে দুই থেকে তিনটা করে রুম বরাদ্দ দিয়েছে। গণরুমে নবীনদের রেখে প্রশাসন ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের অছাত্রদের জন প্রতি রুম দিয়ে রেখেছে বিভিন্ন হলে। যতদিন হল প্রশাসনকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে না ততদিন এই সংকট চলমান ই থাকবে। বেটার গণরুম সেই ধারা চলমান রাখার একটা টার্ম মাত্র।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নিগার সুলতানা বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো নতুন দু’টি হল আছে। পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় আমরা হল দু’টি চালু করতে পারিনি। আশা করি, দেড় মাসের মধ্যে নতুন হল খুলে দেওয়া হবে, তাহলে গণরুম ও মিনি গণরুম থাকবে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, ‘গণরুম সংস্কৃতি দূর করার চেষ্টা করছি। বাকি দু’টি হল শীগ্রই চালু করা হবে। সেখানে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বরাদ্দ দেওয়া হবে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে গণরুম থাকবে না।’
রবিউল হাসান
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়