নিজেকে ‘কুলাঙ্গার’ আখ্যা দিয়ে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফজলে রাব্বি পদত্যাগ করেছেন।
বুধবার (১৭ জুলাই) মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এই পদত্যাগ ঘোষণা দেন বেরোবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফজলে রাব্বি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমি এক কুলাঙ্গার, ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি নিলাম।’
সাংবাদিকদের হাতে আসা আরও স্ক্রিনশটগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রায় অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামিমের গ্রুপ দুটি আলাদা মেসেজ্ঞার গ্রুপ থেকে গণহারে লিভ নিয়েছে। পাশাপাশি, আরও অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পদত্যাগ করেছে।
বেরোবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ আরিফ নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, আজকের ঘটনা আমার আদর্শ বহির্ভূত, তাই আমি সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম।
সহসভাপতি ফজলে রাব্বি লিখেছেন, ‘আমি এক কুলাঙ্গার, ছাত্রলীগের সহসভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি নিলাম।’
পিয়াস লেখেন, ‘আমি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’
সহ-সম্পাদক মো. আল আমিন মিয়া লেখেন, ‘আমি মো. আল আমিন মিয়া। আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সম্পাদক পদে আছি।
আজ আমি আমার বিবেকের কাছে লজ্জিত হয়ে আমার ছাত্রলীগ এর পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিলাম। এখন থেকে ক্যাম্পাসের কোনো রাজনীতির সাথে আমি আর যুক্ত নই।’
এ ছাড়াও, ‘সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামিম নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপে একজন ছাত্রলীগ কর্মী লিখেন, একজন ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে এইটা কখনোই মানতে পারব না। সবার চোখে সামনে আমাদের ছোট ভাইয়ের বুকে গুলি করলো, সে মারাও গেল অথচ আমরা চুপ।’
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার দুপুরে বেরোবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন বেরোবির অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ। মিছিলের সামনে থেকে নেতৃত্বও দেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত বিক্ষোভ মিছিলটি বেরোবি ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। তখন ত্রিমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে শতাধিক টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ। এই সংঘর্ষে মিছিলের সামনে থেকে বুক পেতে দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আবু সাঈদের মৃত্যু হয়।