বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস মাংকিপক্স শনাক্তকরণে সক্ষম যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) এর জিনোম সেন্টার । এই ভাইরাসটি শনাক্তকরণ করার জন্য যবিপ্রবি জিনোম সেন্টারে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন ( সিডিসি ) কতৃক প্রদত্ত তিন সেট প্রাইমার ও রয়েছে।
এছাড়া জিনোম সেন্টার থেকে জানানো হয় যে, যবিপ্রবির এই ল্যাবটিতে সাইবার– গ্রিন পদ্ধতি ব্যবহার করে রিয়েলটাইম -পিসিআর এর মেশিনের মাধ্যমে এই মাংকিপক্স ভাইরাস শনাক্তকরণে সক্ষম । তাছাড়াও ডিএনএ / আরএনএ এক্সট্রাকশনের ও সকল প্রকার সামগ্রী , রি – এজেন্ট কীট এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে যন্ত্রপাতি ও রয়েছে। এর আগে মহামারি করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ই মার্চ ছড়িয়ে পড়লে তখন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একমাত্র প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ২০২০ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে এর নিজস্ব জিনোম সেন্টারে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণ শুরু করে ।
এই ল্যাবটি যশোর, সাতক্ষীরা,মাগুরা,ঝিনাইদহ, নড়াইল ,বাগেরহাট,মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, এবং চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রাপ্ত নমুনা গুলো পরীক্ষা করে । এছাড়া ও বিভিন্ন সময় এই ল্যাবের মান নিয়ন্ত্রণে সিডিসি, ডব্লিউএইচও এবং আইইডিসিআরের নমুনা প্রদান করে এর মান যাচাই করা হয়েছে। ২০২১ সালের ২১ জুন ব্লিউএইচও এর একটি প্রতিনিধি দল এই ল্যাব পরিদর্শন এবং ল্যাবের মান যাচাই বাছাই করে জিনোম সেন্টারের ফলাফল শতভাগ সঠিক এই মর্মে সনদ প্রদান করে ।
তাছাড়া এখন পর্যন্ত যতগুলো নমুনা আইইডিসিআরে প্রেরণ করা হয়েছিল তার সবগুলোর ফলাফল জিনোম সেন্টারের সাথে শতভাগই সঠিক ছিল। ল্যাবটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ২৬ হাজার মতো নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে । তাছাড়া এই জিনোম সেন্টার থেকে বিদেশগামী যাত্রীদের জন্য করোনা পরীক্ষা করে তার সনদ ও প্রদান করা হয়। বাংলাদেশের মধ্যে সর্বপ্রথম ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তকরণ এবং এর জীবন রহস্য উন্মোচন করতে ও সক্ষম হয় এই জিনোম সেন্টার। এছাড়াও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে ওমিক্রন এর ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তকরণ করতে সক্ষম হয় ।
জিনোম সেন্টারের পক্ষ থেকে আরো জনানো হয় যে, অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশে ভবিষ্যতে এই মাংকিপক্স ভাইরাস শনাক্তকরণ এবং এই মাংকিপক্স ভাইরাসের পজিটিভ নমুনা হইতে সিকোয়েন্সিং করে ভাইরাসের ধরণ শনাক্তকরণেও এই জিনোম সেন্টারের সক্ষমতা রয়েছে। একইসাথে বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলে এই প্রাননাশক মাংকিপক্স ভাইরাস শনাক্তকরণ ও এর গবেষণায় ল্যাবটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।