টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার হলে নিকাব খোলা ইস্যুকে কেন্দ্র করে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুন মাওয়া তিশা (মুন) কে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে উক্ত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কানিজ মরিয়ম আক্তারের বিরুদ্ধে।
১৩ আগস্ট (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক গ্রুপে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পর্দা নিয়ে হেনস্থার বিষয়ে অভিযোগ জানান।
তিনি উল্লেখ করেন,নিকাব খোলা ইস্যুকে কেন্দ্র পরীক্ষার হলে সবার সামনে টানা দুইদিন তাকে হেনস্থা করা হয়।তিনি একপাশে আলাদাভাবে চেক করার অনুরোধ জানানোর পরেও শিক্ষিকা সবার সামনে নিকাব খোলার জন্য তাকে জোড়াজোড়ি করতে থাকেন।সবার সামনে নিকাব খুলতে রাজি না হওয়ায় একপর্যায়ে তাকে পরীক্ষা বাতিলের হুমকিসহ নানা রকমের কুটুক্তি করা হয়।
‘তোমার মতো মেয়েরা ভার্সিটিতে পড়তে আসে কেন?’,’ইসলামি শরিয়তে কোথায় মুখ ঢাকার কথা লেখা আছে?’ এরকম নানা প্রকার কুটুক্তি করেছেন বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান।
অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কানিজ মরিয়ম আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন উপরোক্ত ঘটনাগুলো অন্যভাবে কোড করা হয়েছে।
আলাদা স্থানে নিয়ে ফেইস ভেরিফিকেশনের ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিশার পরীক্ষার সিটের অনেক পরে ছেলে শিক্ষার্থীর সিট ছিল।তাই ঐখানে নিকাব খুললে অন্য কেউ তার ফেইস দেখবে এমনটা হওয়ার সুযোগ ছিল না।তিনি আরো বলেন,বাইরে নিয়ে ফেইস ভেরিফিকেশনের আইন নেই এবং এতে অনেক সময় নষ্ট হবে।
এ ঘটনায় প্রশান্ত দাস নামের একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীকে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে উদ্দেশ্য করে অপমানজনক কথাবর্তা ও নকলের ভিত্তিহীন অভিযোগ আনার জন্য শোকজ করা হবে বলে জানান ড. কানিজ মরিয়ম।
পরবর্তীতে প্রশান্ত দাশ ড. কানিজের অভিযোগকে মিথ্যা,ভিত্তিহীন ও বানোয়াট দাবি করেন।এবিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মুনের সাথে যোগাযোগ করে প্রশান্ত দাসের দাবির সত্যতা পাওয়া যায়।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্যমতে ১৫ সেপ্টেম্বর (রবিবার) জান্নাতুন তিশা কে ব্যাবস্থাপনা বিভাগ থেকে ডাকা হয়।নিকাবজনিত কারণে ভবিষ্যতে আর কখনো হয়রানির স্বীকার না পাওয়ার পাশাপাশি তার একাডেমিক লাইফের পূর্ণ-নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উক্ত বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুল গাফফার খান।
পাশাপাশি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যদি বিভাগীয় চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চান তবে সেই পদক্ষেপ নিতেও রাজি আছে ব্যাবস্থাপনা বিভাগ।