রাবি প্রতিনিধি :
যথাযোগ্য মর্যাদায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে সকাল ৮টায় এবং সকাল সাড়ে আটটায় শহীদ মিনার ও বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিন সকাল সোয়া ৯টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা যারা করতেন বঙ্গবন্ধু প্রথম থেকেই তাদের স্মরণ করতেন। ৬ দফা যে আমাদের মুক্তির সনদ সেটা কিন্তু বুদ্ধিজীবী শ্রেণির যারা অর্থনীতিসহ জাতির সামগ্রিক চিন্তা করেন তাদের ছোঁয়া ছিলো। আমাদের প্রিয় মানুষগুলো শহীদ হলেন কেন, তারা তো আরও বাঁচতে পারতেন। যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন তারা কি আত্মহত্যা করতে গেছেন? ওনারা তো জানতেন মুক্তিযুদ্ধে গেলে মারাও যেতে পারেন। ওনারা আসলে দেশের জন্য আত্মাহুতি দিয়েছেন, দেশমাতৃকাকে রক্ষা করতে গিয়ে আত্মদান করেছেন। বাঙালি জাতির জন্য বুদ্ধিজীবীদের অবদান অনস্বীকার্য।
আলোচনা সভায় অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক তাঁর বক্তৃতায় বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে যে মুক্তিযুদ্ধের সময় অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে স্বাধীনতা পর্যন্ত বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার চেষ্টা হয়েছে। রাও ফরমান আলী ২০ হাজার বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। পরিকল্পনায় ছিল বুদ্ধিজীবীদের গভর্নর হাউজে দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হবে। কিন্তু যখন রাও ফরমান আলী বুঝতে পারে দাওয়াত দিলে সবাই আসবে না, তখন এই পরিকল্পনা পরিত্যক্ত হয়। ইতিহাসকে ধ্বংস করার জন্য পাকিস্তানিরা বুদ্ধিজীবীদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করে।
অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, আমাদের এই ভাষা, স্বাধীনতায় বুদ্ধিজীবীদের অবদান অনস্বীকার্য । স্বাধীনতায় বুদ্ধিজীবীদের অবদান কতটা এই বিষয়ে আরো চর্চা হওয়া উচিত। শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা কত এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন, এখনকার প্রজন্মকে সঠিক তথ্যটি জানানো আমাদের দায়িত্ব।
এদিন দুপরে বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত ও সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। পরে পৌনে ৫টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন ও সন্ধ্যায় ৬টায় নাটক মঞ্চায়ন হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাড়াও বিভিন্ন ইনস্টিটিউট, বিভাগ, আবাসিক হল, সাংবাদিক সংগঠনসহ অন্যান্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নিজ নিজ কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করে।
মীর কাদির
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়