রাজধানীর উত্তরায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২০০ ভরি স্বর্ণ লুট করেছে কিছু পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
তাদের মধ্যে একজন পুলিশের এএসআই। জানা গেছে, ওই এসআইসহ পুলিশের আরও এক উপপরিদর্শক ও এক সহকারী উপপরিদর্শকের নেতৃত্বে সোনা লুটের ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,গত ১৩ ডিসেম্বর গৌরাঙ্গ দত্ত নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী তাঁতীবাজার থেকে তার দোকানের প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণ গলিয়ে এনে উত্তরার বাসায় রাখেন। পরে ১৪ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ওই স্বর্ণ নিয়ে তার ভায়রার ছেলে অনিক ঘোষ নিজ দোকানের উদ্দেশে বের হন। উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের গাউছুল আজম অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছালে,পুলিশের চারজন লোক মাইক্রোবাস থেকে নেমে ডিবি পরিচয়ে তাকে হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে তুলেন। পরে তার কাছ থেকে স্বর্ণ ও মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে মেট্রোরেলের উত্তরা স্টেশনের কাছে ফেলে যান।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত একজনের মুঠোফোনের অবস্থান গাজীপুরের শ্রীপুর থানা এলাকায় শনাক্ত করে।
পরে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় ২৪ ডিসেম্বর গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি শ্রীপুর থানায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত।
তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এএসআই গিয়াস উদ্দিন স্বীকার করেন যে ঘটনার দিন তিনিই ভুক্তভোগী অনিক ঘোষের হাতে হাতকড়া পরিয়েছিলেন। ডাকাতির সোনা বিক্রির ৩৭ লাখ টাকা তিনি ভাগে পান। এর মধ্যে দুই লাখ টাকা তিনি খরচ করে ফেলেন। বাকি টাকা তাঁর বাসায় আছে।
এরপর উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ গিয়াসের কুমিল্লার বুড়িচংয়ের গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালায়। তাঁর বাসার আলমারিতে রাখা একটি প্লাস্টিকের বস্তার ভেতর থেকে সোনা বিক্রির ৩৫ লাখ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।
সোনা লুটের ঘটনায় গ্রেপ্তার অপর পাঁচজন হলেন জাহাঙ্গীর হোসেন (লিটন), গোলাম সারোয়ার (৪৯), আনিস মোল্লা (৩০), সুজন চন্দ্র দাস (২৯) ও আমির। এদের মধ্যে আমির ছাড়া বাকি চারজন এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।