বেরোবি প্রতিনিধি:
বাঙালি মুসলিম নারী জাগরণের অগদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়ার হোসেনের স্মরণে ৯ডিসেম্বর রংপুরসহ সারাদেশে রোকেয়া দিবস পালিত হয়েছে।
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর, রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবা জহির উদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের এবং মা রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী।
রোকেয়া দিবস উপলক্ষে বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান রংপুরের পায়রাবন্দ এ উপজেলা প্রশাসন কতৃক আয়োজিত আলোচনা সভা ও তিন দিন ব্যাপি মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় দূর দূরান্ত থেকে দোকানিরা পসরা সাজিয়েছেন। এ মেলায় নারী উদ্যোগতারা অনেক আগ্রহ নিয়ে দোকান সাজিয়েছেন।
উক্ত আলোচনা সভায় রংপুর জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক ছিলেন সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ এর সাবেক বাংলা বিভাগের প্রধান প্রফেসর মোহাম্মদ শাহ্ আলম, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাম মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন বাবুল, পায়রাবন্দ সরকারী ডিগ্রী কলেজের অধ্যাক্ষ জনাব একরামুল হক, জনাব রজ্ঞিনা সাবের, আলোচক ছিলেন জনাব রফিকুল ইসলাম দুলাল এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব শাহরিয়ার রহমান।
মেলায় আগত নারী উদ্যোগতারা বলেন, বেগম রোকেয়া নারীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ফলে আজ আমরা সাবলম্বী হতে পারছি, নারীরা পড়াশুনা করে অনেক বড় জায়গায় চাকরি করছে এবং সমাজ গঠনে নারীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
রোকেয়া দিবস এ বিভিন্ন স্কুল, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা এসেছেন বেগম রোকেয়ার স্মৃতি সম্পর্কে জানতে; তারা ঘুরে দেখছেন বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তৃষা কুন্ডু বলেন, প্রথমবার এখানে এসে আমার ভালো লেগেছে তবে বেগম রোকেয়ার একটি ম্যুরাল এবং তাদের বাড়ির সামান্য কিছু ভাঙা অংশ ছাড়া এখানে কিছুই নেই। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রকে আরো সমৃদ্ধ করতে পারলে এবং তার স্মৃতিকে ধরে রাখতে পারলে পরবর্তী প্রজন্ম এই মহীয়সী নারী সম্পর্কে বিস্তর ভাবে জানতে পারবে।
দোকানিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মেলায় প্রথম দিনে অনেকে দর্শনার্থী ভিড় জমিয়েছেন এবং তাদের ভালো বিক্রি হচ্ছে। পরবতী দুইদিনে আরো বিক্রি বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন।
মেলায় আগত দশনার্থী মানিক বলেন, বাচ্চাকে নিয়ে মেলায় আসছি তাকে বেগম রোকেয়া সম্পর্কে জানিয়েছি, মেলা ঘুরে দেখছি তবে এবছর অন্য বছরের তুলনায় আয়োজন কম। সরকারের উচিৎ রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রকে আরো সমৃদ্ধ করা, যথাযথ কতৃপক্ষ এদিকে সুনজর দিবে বলে তিনি আশা রাখেন।
রোকেয়া দিবসে বিভিন্ন নারীদের সংগঠন নারীদের অধিকার আদায়ে, সামাজিক, অর্থনৈতিকসহ সকল নারীদের অংশগ্রহণে কাজ করছেন।
স্বর্ণনারী এ্যাসোসিয়েশন, রংপুর “নারীর জন্য বিনিয়োগ সহিংসতা প্রতিরোধে” ১৬ দিন ব্যাপী কর্মসূচি চালাচ্ছেন এরই অংশ হিসাবে তারা আজ এখানে আগত সকল মানুষকে নারীর অধিকার আদায়ে এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতন করছেন।
মেলায় সার্বিক নিরাপত্তার নিয়োজিত ছিল বাংলাদেশ টুরিস্ট পুলিশ।
মো: আকবর আলী রাতুল,
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।