বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) লাইব্রেরির সময়সীমা এবং বর্তমান ব্যবস্থা নিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সকলেই ডিজিটাল লাইব্রেরি দাবি জানিয়েছেন। লাইব্রেরি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও সমৃদ্ধির মানদণ্ডের অন্যতম। প্রাসঙ্গিক কারণেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে থাকা উচিৎ টেক্সটাইল ও ইঞ্জিনিয়ারিং জ্ঞানের প্রাচুর্য। কিন্তু বাস্তব দৃশ্য কিছুটা ভিন্ন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ লাইব্রেরি অধিকাংশ সময় দেরি করে চালু হয়। আবার ক্লাস শেষ হওয়ার আগে লাইব্রেরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে অনেকেই লাইব্রেরি প্রয়োজনের সময়ে ব্যবহার করতে পারে না।
টেক্সটাইল ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সুমাইয়া বিনতে সামজাদ বলেন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক রেফারেন্স কপি থাকলেও বাসায় নিয়ে আসার মতো বইয়ের সংখ্যা অনেক কম। অনেক বই পাওয়া যায় না। ম্যাথ সংক্রান্ত বই তো নেই বললেই চলে। তাছাড়া নন অ্যাকাডেমিক বইয়ের সংখ্যা খুবই নগণ্য। নন অ্যাকাডেমিক বইয়ের পরিধি বাড়ানো উচিত।
৪৬তম ব্যাচের ইয়ার্ন ইঞ্জনিয়ারিং বিভাগের মাহমুদুল মাহফুজ এর মতে, বসার জায়গার বেশ অভাব রয়েছে, বই এর সংখ্যাও কম। বসার চেয়ার টেবিলেও বেশ সমস্যা রয়েছে বসে ঠিকভাবে লিখা যায় না।
একই ব্যাচের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান লাইব্রেরিতে টেক্সটাইল বিষয়ের বিভিন্ন রিসার্চ পেপার জার্নাল এর সংখ্যা বাড়ানো উচিৎ বলে মনে করেন।
৪৯তম ব্যাচের টেক্সটাইল মেশিনারি ডিজাইন এন্ড মেইনটেনেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী অর্ক ধর জানান, লাইব্রেরিতে ইসলাম ধর্মীয় বই থাকলেও সনাতন ধর্মের কোনো বই নেই। তিনি লাইব্রেরিতে কিছু সনাতন ধর্মের বই থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে।
পাশাপাশি লাইব্রেরির বই সংগ্রহের পদ্ধতি নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। লাইব্রেরি কার্ড দিয়ে ২টি বই নেয়া যায়। অনেক সময় বিশেষ করে পরীক্ষার সময় ২টার বেশি বই লাগে তখন সমস্যাতে পরতে হয় শিক্ষার্থীদের।
বর্তমানে লাইব্রেরিতে কর্মরত রয়েছে ২ জন করে লাইব্রেরি ইনচার্জ, বুক শাটার এবং কম্পিউটার অপারেটর নেই কোনো লাইব্রেরিয়ান।
লাইব্রেরির সময়সীমার অভিযোগ লাইব্রেরিতে কর্মরত কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে জানা যায়, লাইব্রেরি সরকারি কর্ম প্রতিষ্ঠানের যে নিয়ম ৯টা থেকে ৪টা সেই নিয়ম অনুযায়ী লাইব্রেরি চলছে। এই সময়সীমা বৃদ্ধি হওয়ার সুযোগ নেই। লাইব্রেরির পাঠ্যপুস্তক বিষয়ে তারা বলেন, নতুন কিছু বই প্রতি বছর আনা হয় আগামী বছর ও অনেক বই আসবে। তবে জার্নাল বা রিসার্চ পেপার বই এর চাহিদা ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে কম বলে জানা যায়। লাইব্রেরি কর্মকর্তারাও ডিজিটাল লাইব্রেরির প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেন। এছাড়া সকল শিক্ষার্থীদের কাছে লাইব্রেরির পরিবেশ সুন্দর রাখার জন্য অনুরোধ করেন। যথা স্থানে জুতো ব্যাগ রাখা সহ লাইব্রেরির মধ্যে শৃংখলা বজায় রাখতে তাদের সাহায্য করার জন্য বলেন।
উক্ত সমস্যা ও সমাধান নিয়ে রেজিস্টার জানান, সকল সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হইতো যদি একজন লাইব্রেরিয়ান থাকতেন, একজনকে নিয়োগ দিয়া হলেও সে পরে জয়েন করেনি। আবার নিয়োগ দিয়ে একজন লাইব্রেরিয়ান নিযুক্ত করতে সময় লাগবে আর জনবল নিযুক্ত সহ সকল সমস্যা দূর করার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিবেন।
আশার বাণী এই যে ডিজিটাল লাইব্রেরি নির্মাণ এবং সময়ের সমস্যা দূর করতে পূর্বের মতো দুই শিফট করার পরিকল্পনা রয়েছে।
যতো দ্রুত উক্ত পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়ন হবে সকল শিক্ষার্থী তাতে উপকৃত হবে।
রাতুল সাহা
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়