জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন জীববিজ্ঞানে শিক্ষা ও গবেষণায় তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ একাডেমি অফ সায়েন্স-২০২৩ এর স্বর্ণপদক (সিনিয়র গ্রুপ) পেয়েছেন।মঙ্গলবার বাংলাদেশ বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. হাসিনা খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয় ।
অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন ২০২১ সালে ‘Bangladesh Academy of Sciences (BAS)’ এর ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন ও ২০০৬ সালে ‘Bangladesh Academy of Sciences (BAS)’ এবং ‘Third World Academy of Science (TWAS, Trieste, Italy) কর্তৃক স্বর্ণপদকে ভূষিত হন।
তিনি বলেন, আমি খুবই আনন্দিত, পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না। আমি আমার পরিশ্রমে সফলতা পেয়েছি।২০০১ সালে বিদেশ থেকে এসে যখন এখানে যোগদান করি, তখন থেকেই ইচ্ছা ছিল খুব ভালোভাবে কাজ করে একটি ভালো বিভাগ দাঁড় করানোর। তারপর থেকেই আমার শিক্ষকতা ও গবেষণা শুরু হয়। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির বিজ্ঞানী হিসেবে স্বর্ণপদক পেয়েছিলাম যা আমাকে অনেক উৎসাহিত করেছিল এবং আজ আমি সিনিয়র গ্রুপ থেকে আবার স্বর্ণপদকের জন্য নির্বাচিত হয়েছি।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিভাগ থেকে স্নাতক (১৯৮৬) ও স্নাতকোত্তর (১৯৮৭) ডিগ্রি সম্পন্ন করে ১৯৯৯ সালে জাপানের Shimane Medical University থেকে পিএইচডি ডিগ্রি (in Human Physiology) অর্জন করেন। ২০০১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগে প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১০ সাল থেকে অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত আছেন।
এছাড়াও তিনি ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিভাগীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ গবেষণা জীবনে তিনি এক দশকেরও বেশি সময় জাপানের বিভিন্ন খ্যাতনামা গবেষণাগারে পোষ্ট-ডক্টরাল গবেষক হিসেবে কাজ করেন এবং শতাধিক উচ্চ মান- সম্পন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করার পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি বেশ কিছু গল্প-উপন্যাসও লিখেছেন: আলো (২০০২), দিঙমূঢ় (২০০৭), জোছনা জলে জলসিঁড়ি (২০০৮), নৈঋতী (২০১১), জাপানি দিনরাত্রির গল্প (২০২৩), হাজিমেমাশোও জাপানি দিনরাত্রির গল্প (২য় খণ্ড, ২০২৪), ব্যাকস্টেজ ইন দ্য সিম্মেলা স্টোরি (২০২৪)। বিরল প্রতিভাধর এই বিজ্ঞানী ইতিমধ্যেই তাঁর নানান অর্জনের মধ্য দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সম্মানিত করেছেন।
রবিউল হাসান
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়