বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা এবং সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট (লাল পাসপোর্ট) বাতিল করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়েছে এবং খুব শিগগিরই সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের নামের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলের আদেশ জারি করা হবে।
যেসব সাবেক মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলা আছে বা যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাদের সাধারণ পাসপোর্ট পেতে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে আদালতের আদেশ পেলেই কেবল সাধারণ পাসপোর্ট মিলবে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তার সরকারের কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী-এমপি ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন, আর কেউ কেউ গ্রেপ্তার এড়াতে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন।
ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা কূটনৈতিক পাসপোর্টের সুবাদে অন্তত দেড় মাস কোনো ভিসা ছাড়াই ভারতে অবস্থান করতে পারতেন। ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতার অধীনে এই সুবিধা ছিল। শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ভারতে পৌঁছেছেন এবং ভারতের আইন অনুযায়ী তিনি ২৯ দিন পর্যন্ত ভারতে থাকতে পারবেন, যদি তার পাসপোর্ট বাতিল না হয়। অন্যদিকে, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টধারী, ফলে তিনি ভারতে অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পাবেন এবং যতদিন খুশি ভারতে থাকতে পারবেন।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত নতুন সরকারের গঠনের পর মন্ত্রী-এমপিরা পাঁচ বছরের জন্য কূটনৈতিক পাসপোর্ট (লাল পাসপোর্ট) পান। সংসদের মেয়াদ শেষ হলে এই পাসপোর্টের বৈধতা শেষ হয়ে যায়। কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হলে, সংশ্লিষ্টরা সাধারণ পাসপোর্ট (সবুজ রঙের) পেতে পারেন। তবে, ফৌজদারি মামলার অধিকারীদের সাধারণ পাসপোর্ট পেতে আদালতের নির্দেশনা প্রয়োজন।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, সংসদের মেয়াদ শেষ হলে বা সংসদ ভেঙে গেলে কূটনৈতিক পাসপোর্টের বৈধতা শেষ হয়ে যায়। সাধারণত কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীরা মেয়াদ শেষে সেই পাসপোর্ট জমা দিয়ে সাধারণ পাসপোর্ট নেন।
এমএ//