শোবিজের পাশাপাশি একটা সময় রাজনীতিতেও বেশ সক্রিয় ছিলেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। পরিচিত ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জ্যোতিকে এখন আওয়ামীপন্থি শিল্পী হিসেবেই চেনে সবাই।
আলোচনায় আসা ‘আলো আসবেই’ গ্রুপকাণ্ডেও তার চোখে পড়ার মতো। যেসব তারকা শিক্ষার্থীদের পক্ষ নিয়ে রাজপথে ছিলেন তাদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতে দেখা যায় এই অভিনেত্রীকে। সব মিলিয়ে তার প্রতি সর্বমহলে প্রচণ্ড তিক্ততা সৃষ্টি হয়েছে ; যার জন্য জ্যোতির এসব সমালোচিত কর্মকাণ্ডগুলো দায়ী ।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর প্রথমবারের মত শিল্পকলা একাডেমিতে পা ফেলেন জ্যোতিকা জ্যোতি। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি অফিসে প্রবেশ করা মাত্রই উত্তেজনা সৃষ্টি হয় তার সহকর্মীদের মাঝে। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে শিল্পকলা একাডেমি ছাড়তে হয় তাকে।
গত সরকারের সময় পরিচালক হিসেবে শিল্পকলা একাডেমিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন জ্যোতিকা জ্যোতি। সে জন্যেই অফিসে উপস্থিত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর আইরিন পারভীন লোপা গণমাধ্যমকে জানান, জ্যোতিকা জ্যোতি অফিসে আসায় হতবাক তারা। তার কথায়, ‘যিনি স্বৈরাচার সরকারের হয়ে কথা বলেছেন, তিনি কীভাবে অফিসে আসেন। যারা সরাসরি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করতে উৎসাহিত করেছেন, যারা রক্ত ঝরার জন্য দায়ী, তাদের আমরা সহকর্মী হিসেবে চাই না।’
এই কর্মকর্তা জানান, জ্যোতি মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে অফিসে প্রবেশ করেন। এক পর্যায়ে জ্যোতিকে দেখে শিল্পকলার বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা জড়ো হতে থাকেন। এরপর জ্যোতিকে দেখে দরজা বন্ধ করে দেন। আইরিনের কথায়, ‘আমরা তাকে বলেছি অফিস থেকে চলে যেতে। কারণ, তিনি ‘আলো আসবেই’ নামে একটি গ্রুপে যুক্ত হয়ে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে কথা বলেছেন। এমন লোক আমরা দেখতে চাই না।’
আইরিন পারভীন এও জানান, নিজেকে এখনও সরকারের নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা হিসেবেই ভাবেন জ্যোতি। তিনি মনে করেন, তার অধিকার রয়েছে অফিসে আসার।
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণের এক কর্মকর্তার কক্ষে গা ঢাকা দিয়ে আছেন জ্যোতিকা জ্যোতি। তার কয়েক সহকর্মী বাইরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলেন।