মেহেদী হাসান মিরাজ যখন পাকিস্তানে পা রাখেন, তখন অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে—মাত্র একটি ম্যাচ খেলতেই কি তাকে দলে ভিড়িয়েছে লাহোর কালান্দার্স? কারণ, দলটি তখন ছিল টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায়।
কিন্তু দৃঢ় মানসিকতায় ঘুরে দাঁড়ায় লাহোর। শেষ চারে জায়গা করে নেয় তারা। এরপর এলিমিনেটরে করাচি কিংসকে হারিয়ে পৌঁছে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। সেখানেও ইসলামাবাদ ইউনাইটেডকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় লাহোর কালান্দার্স। প্রতিটি ম্যাচে যেন ‘শেষ সুযোগের’ মতো খেলেছে তারা, প্রতিপক্ষকে কোনোভাবেই সহজে খেলতে দেয়নি।
এই দলে রয়েছেন বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটার—সাকিব আল হাসান, রিশাদ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। যদিও সাকিব ও রিশাদ মাঠে নেমেছেন, মিরাজ এখনো খেলার সুযোগ পাননি। শেষ দুই ম্যাচে তিনি ডাগআউট থেকেই দলের সাফল্য উপভোগ করেছেন।
আজ রাত ৮টা ৩০ মিনিটে লাহোরের প্রতিপক্ষ কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটরস। ফাইনালে বাংলাদেশের এই তিন ক্রিকেটারকে একসঙ্গে মাঠে দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
রিশাদ হোসেনকে একাদশে রাখা নিশ্চিত বলা চলে। তিনি শেষ ম্যাচেই বল হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ৩ উইকেট শিকার করেন।
সাকিব আল হাসানের পারফরম্যান্স নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় থাকলেও, ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার অভিজ্ঞতা যে বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে, সেটা অনস্বীকার্য। তিনি এখন পর্যন্ত ১৫টি টি-টোয়েন্টি ফাইনাল খেলেছেন এবং আইপিএল ও বিপিএল মিলিয়ে ৭টি শিরোপা জয় করেছেন। একাদশে তার থাকা অনেকটাই অনুমেয়।
মেহেদী হাসান মিরাজকে খেলানোর সম্ভাবনা তুলনামূলক কম হলেও, তার অফ স্পিন বোলিং ফাইনালের কৌশলে কাজে লাগতে পারে। তবে সমস্যার জায়গা হলো—লাহোর ইতোমধ্যে সাকিব ও রিশাদ ছাড়াও দুই বিদেশি ব্যাটার কুশল পেরেরা ও ভানুকা রাজাপাকসাকে খেলাচ্ছে।
কুশল পেরেরা শেষ ম্যাচে ৩৫ বলে ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন এবং উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবেও কার্যকর। রাজাপাকসাও গত দুই ম্যাচে যথাক্রমে ১৩ বলে ২২ ও ১২ বলে ২৩ রানের ছোট কিন্তু ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন। ফলে তাদের বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা কম।
এমন অবস্থায় মিরাজকে একাদশে জায়গা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি একটাই—তার বোলিং। যদিও এখনও বিদেশের মাটিতে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টিতে তার অভিষেক হয়নি। ফাইনালে সুযোগ পেলে সেটা হবে তার জন্য বড় এক অর্জন।
প্রসঙ্গত, লাহোর ২০২০ সালে রানার্সআপ হয়েছিল। এরপর ২০২২ ও ২০২৩ সালে টানা দুইবার শিরোপা জিতেছে তারা। এবার লক্ষ্য হ্যাটট্রিক শিরোপা। অন্যদিকে, কোয়েটা ২০১৯ সালে শিরোপা জিতেছিল, তবে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে টানা দুইবার রানার্সআপ হয়েছিল তারা।
এবার শেষ হাসি কার মুখে ফুটবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।