সেশনজট নিরসন ও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা সময়ের ভিতর নেওয়াসহ ৪ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে অফিস ও শ্রেনিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগেরগের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার ( ২৪সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় বিভাগের সামনে তারা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা এসময়, ‘পরিবারের নামে প্রতারণা, চলবে না, চলবে না’, ‘আমরা কেনো আদুভাই, জবাব চাই!জবাব চাই’, এক বছরে সেমিস্টার, ধিক্কার! ধিক্কার! ‘, ‘পরীক্ষার কেনো ধীর গতি? কি করছেন সভাপতি ‘, ‘৪ মাসে সেমিস্টার, সব ব্যাচের দরকার ‘, ‘আর নয় বাড়াবাড়ি, পরীক্ষা চাই তারাতাড়ি ‘,
‘বাবা গো! সোনা গো! ছাইড়া দেন!ছাইড়া দেন’, ‘মিস্টি আলাপ বাদ দেন, ৪ দফা মাইনা নেন’,
‘গুটি চালানো বাদ দেন, আমাদের মুক্তি দেন’,
‘রেজাল্ট কেন দশ মাসে, রেজাল্ট চাই ১ মাসে ‘, ‘শিক্ষকদের স্বৈরাচার রুখে দাও, গুড়িয়ে দাও’, ‘মোস্তাকের দোসররা হুশিয়ার সাবধান, তদন্তে সহায়তা, করতে হবে করতে হবে’, ‘মোশতাকের পক্ষ নিলে, চেয়ার আপনার থাকবে নারে’, মাস গেলে বেতন তোলে,পরীক্ষা কেন থাকে ঝুলে! স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবিগুলো হলো: ১. ডিপার্টমেন্টের ৩০ ব্যাচের ২য় বর্ষ, ২য় সেমিস্টারের পরীক্ষা হবে হবে বলে হচ্ছেনা। ৪ মাসের সেমিস্টার ১০ মাস হয়ে গেছে। তাদের পরীক্ষা অতি দ্রুত নিতে হবে। ২. ৩১ ব্যাচের ২য় বর্ষ, ১ম সেমিস্টারের ক্লাস গত বছরের ২৫ নভেম্বর শুরু হলেও এখনো ফর্ম ফিলাপের তারিখ দেওয়া হয়নি। এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের ফর্ম ফিলাপের তারিখ ও পূজার আগে পরীক্ষা নিতে হবে।
অধ্যাপক মোসতাক আহমেদের চারটি গুরুতর অভিযোগ ডকুমেন্টস সহ এনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা তার অপসারণের দাবি জানানো হলেও সে বিষয়ে বিভাগ থেকে তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা। আমাদের দাবি মোসতাক কে অব্যবহিতর জন্য প্রশাসনকে তদন্তে সহায়তা করতে হবে। আমাদের বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কি ধরনের সহযোগিতা বা কি কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে তা আমাদের স্পষ্ট ভাবে জানাতে হবে এবং প্রত্যেক বর্ষের শিক্ষার্থী ভয়াবহ সেশন জটে পড়েছি৷ বিভাগের কাছে কয়েক দফা আলোচনা করলেও তারা শুধু আমাদের আশ্বাস’ই দিয়ে গেছে। কোন কার্যকর পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাই নি। তাই সব সেমিস্টার এখন থেকে পরীক্ষা সহ চার মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। অর্থাৎ এক বছরে তিন সেমিস্টার যাতে শেষ হয় সেটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
বিভাগের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাদিয়া হক মিথি বলেন, আমরা বছরের পর বছর এই অনিয়মের দৃষ্টান্ত দেখেছি। সেমিস্টারর পদ্ধতি কয়েক বছর আগেই শুরু হয়েছে তবুও সেশনজট নিয়ে ভোগান্তি কমেনি শিক্ষার্থীদের। আমাদের দাবি হলো অটোমেশন সিস্টেমের বাইরের বেচগুলর ৪ মাসে সেমিস্টার শেষ করতে হবে এবং পরিক্ষা শেষ হওয়ার ১৫-৩০ দিনের মধ্যে রেজাল্ট দিতে হবে।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন,আমরা দীর্ঘ ১০ মাস ধরে এক সেমিস্টারেই পড়ে থাকি। এভাবে চলতে থাকলে ৪ বছরের অনার্স শেষ করতে ৬ বছর লেগে যাবে। আমরা আমাদের সেশনজট নিরসন চাই। সময়মত সকল বিভাগের সকল পরীক্ষা নিয়ে ১ মাসের ভিতর রেজাল্ট দিতে হবে।
একপর্যায়ে বিভাগের সভাপতিসহ অন্যান্য শিক্ষকরা এসে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর প্রেক্ষিতে সভাপতি বলেন, যে পরীক্ষাগুলো স্থগিত রয়েছে তা অতি দ্রুত শুরু হবে। ৩০ ব্যাচের পরীক্ষা আগামি ২৮ সেপ্টেম্বর ও ৩১ ব্যাচের প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ ৮ই অক্টোবরের মাঝে এবং পরীক্ষা ১৬ই অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা মানতে নারাজ। রিপোর্ট লেখা চলাকালীন আলোচনা চলমান ছিলো।
আরএ//