আজ সোমবার রাজধানীর গুলশান এলাকায় হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ৮ বছর পূর্ণ হলো। এই হামলাকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এতো বড় একটি ঘটনার পরেও এখনো অনলাইনে সক্রিয় রয়েছে জঙ্গিরা।
একটা সময় শুধুমাত্র টেলিগ্রামেই সীমাবদ্ধ ছিলো তাদের সকল কার্যক্রম। তবে তারা এখন নতুন সব অ্যাপসে নিজেদের যাবতীয় কার্যক্রম চালাচ্ছে অনেকটা নির্বিঘ্নে।
আজ থেকে ঠিক ৮ বছর আগে, ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে জানা যায়, গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হোলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসীদের সাথে পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। ৫ জন জঙ্গি বেকারিতে ঢুকেই প্রথমে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ১৮ জন বিদেশি নাগরিকসহ মোট ২২ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
তাদের মধ্যে সাতজন জাপানের, নয়জন ইতালির, একজন ভারতের এবং তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। তিনজন বাংলাদেশির মধ্যে একজনের দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিলো।
ওইদিন রাত ১০টার দিকে র্যাব, পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনীর কয়েকশ সদস্য ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। একই সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীরাও ৭৯ নম্বর রোডের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান নেন। জঙ্গিদের সাথে গোলাগুলিতে আহত হন বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দীন এবং রাত ১১টার দিকে হাসপাতালে মারা যান তিনি। সন্ত্রাসীদের সাথে রাত ৪টা পর্যন্ত কোনো ধরণের যোগাযোগ করতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেই রাতেই ইসলামিক স্টেট জঙ্গিগোষ্ঠীর (আইএস) পক্ষ থেকে হামলাকারীদের মধ্যে ৫ জনকে তাদের ‘সৈনিক’ বলে দাবি করে, এবং হামলার দায় নেয় তারা।
সারা রাত বেকারি সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রাখার পর সেনা, নৌ, পুলিশ, র্যাব এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ কমান্ডো দল গুলশানে অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেন। পরদিন সকাল পৌনে ৮ টায় কমান্ডো বাহিনী তাদের অভিযান শুরু করে। দলের সদস্যরা রেস্তোরার ভিতরে প্রবেশ করেন। বেকারি থেকে প্রথম দফায় নারী ও শিশুসহ ৬ জনকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। গোয়েন্দা দল ভবনের ভেতর বিস্ফোরকের আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করে।
সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে এই অভিযান শেষ হয়। ‘থান্ডারবোল্ট’ নামে যে অভিযান চালানো হয় সেখানে জঙ্গি হামলায় অংশ নেয়া ৫ জন তরুণের সকলেই মারা যান। তারা ছিলেনঃ মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিবরাজ ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।
সকাল ১০টায় সর্বমোট ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ১১টা ৫০ মিনিটে জঙ্গিদের ৬ জন নিহত এবং একজন ধরা পড়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়।