নাঈম ইসলাম সংগ্রাম
হাবিপ্রবি
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) উপাচার্যের সাথে প্রমোশন নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রভাষকদের সাথে খারাপ আচরণ করায় ৩ দাবিতে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রভাষকেরা।
আজ রবিবার দুপুর ১২ টায় প্রভাষকেরা ৬২ জন প্রভাষকের প্রমোশন নিয়ে উপাচার্যের অফিসে কথা বলতে গেলে তিনি প্রভাষকদের সাথে উচ্চবাচ্য করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষকেরা। পরে তারা দুপুর সাড়ে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সম্মুখে আন্দোলনে বসেন।
তারা বলেন,আমরা উপাচার্য মহোদয়ের নিকট আমাদের প্রমোশন নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম, আপডেট জানতে গিয়েছিলাম। আমরা কেন সেখানে গিয়েছি তিনি সেটি জিজ্ঞেস না করেই বলেন, তোমাদের কি কাজ কাম নেই? তোমাদের বিষয়ে কাজ চলতেছে তোমরা কেন এসেছো এবং আমাদের সাথে উচ্চবাচ্য বিনিময় করেন।প্রভাষকেরা আক্ষেপ পোষণ করে বলেন, সেখানে নারী প্রভাষকেরাও ছিলেন কিন্তু উপাচার্য মহোদয় তাদেরও সম্মান দেখাননি।তিনি সকলের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য আচরণ নয়। আমরা হয়তো তার জুনিয়র, প্রভাষক পদে শিক্ষকতা করছি।তার ভুলে গেলে চলবে না যে আমরা তার কলিগ।তিনিও একসময় প্রভাষক ছিলেন।সেখান থেকেই আজকের উপাচার্য হয়েছেন। দীর্ঘ পাঁচ মাস হয়ে গেলেও তারা আমাদের প্রমোশন দিচ্ছে না।বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কিন্তু আমাদের প্রমোশনটাই শুধু আটকে আছে।
তারা আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছেন আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের বোর্ডের মাধ্যমে কোনো প্রমোশন হবে না।আমরা বলেছি আপনারা তাহলে দ্রুত বোর্ড গঠন করে আমাদের প্রমোশনের ব্যবস্থা করুন।কিন্তু সেটি করতে নাকি ১ বছর সময় লাগবে।কথায় কথায় তারা ফ্যাসিস্টের কথা বলে কিন্তু ফ্যাসিস্টদের ইতিমধ্যে বিভিন্ন দলে ভিড়ানোর বিষয়ও চলছে।তাদের নিয়ে নানা প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত করা যায় কিন্তু আমাদের প্রমোশন দেওয়া যায় না।উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার তারাও তো আওয়ামিলীগের রাষ্ট্রপতি দ্বারাই মনোনীত হয়েছেন। আওয়ামিলীগের কোন সচিবই তো তাদের ফাইল সিগনেচার করেছে।কিন্তু আমাদের বেলাতেই যত তালবাহানা।
এ বিষয়ে জানতে কথা বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রেজারার প্রফেসর ড. এম জাহাঙ্গীর কবিরের সাথে। তিনি বলেন,উপাচার্য মহোদয় স্যার ওনাদের প্রমোশনের বিষয়ে অত্যান্ত আন্তরিক। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে বোর্ড গঠনের ফাইল পাঠানো হয়েছে। আশা রাখছি মে মাসের মধ্যেই বোর্ড গঠন হবে এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় হতে যে মেম্বারগুলো যুক্ত করা হবে তাদের যুক্ত করে আগামী জুনের মধ্যে তাদের প্রমোশনের কাজ হয়ে যাবে।
আন্দোলকারী প্রভাষকদের সাথে আপনাদের কোনো যোগাযোগ হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,আমাদের প্রতিনিধি দল প্রক্টর, স্টুডেন্ট এডভাইজার স্যার তাদের সাথে কথা বলতে গিয়েছিলেন যে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজারার ওনাদের সাথে ভিআইপি কনফারেন্স রুমে কথা বলতে চায়।কিন্তু তারা কথা বলতে রাজি হননি।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রভাষকেরা এখনও প্রশাসনিক সম্মুখে আন্দোলন করছেন।তারা ইতিমধ্যে তিনটি দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। তাদের দাবিতে বলেছেন, আমাদের দাবিসমূহ পারে :
১) ফিমেইল কলিগসহ সকল প্রভাষকদের সাথে দুর্বব্যবহার ও মিথ্যাচারের জন্য ভিসিকে নিশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে
২) আগামী ১৫ই মের মধ্যে প্রমোশন বোর্ড শুরু করে দ্রুত প্রমোশন দিতে হবে।
৩) ডিউ ডেট থেকে আর্থিক সুবিধা(এরিয়া) প্রদান করতে হবে।
আমাদের এই ৩ টি দাবি পূরন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি চলবে এবং প্রশাসন যদি এই বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।